২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

 

করোনার প্রভাবে ন্যায্য দাম নিয়ে শংকিত নরসিংদীর লটকন চাষিরা

আপডেট: জুলাই ৪, ২০২০

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

হারুনুর রশিদ, নরসিংদী থেকে : নরসিংদীর অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেই চলেছে এক সময়কার অপ্রচলিত ফল লটকন। দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে রফতানি হওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ায় লটকন চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।

নরসিংদীর স্থানীয় কৃষক ও কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৩৫ বছর আগে অপ্রচলিত ফল লটকনের আবাদ শুরু হয়। এরপর থেকে রায়পুরা (মরজাল) ও বেলাব এবং শিবপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের লালমাটি হওয়ায় এলাকায় লটকন চাষের প্রসার ঘটতে থাকে। দিন দিন মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে খাদ্য ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ লটকনের চাহিদা বাড়তে থাকে বাজারে। ব্যাপক চাহিদা ও লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই লটকনের চাষ বাড়ছে। বিশেষ করে রায়পুরার মরজাল এবং বেলাব ও শিবপুর উপজেলায় গত ৩০ বছরে বাণিজ্যিকভাবে লটকনের প্রসার ঘটেছে। উপজেলার প্রায় প্রতিটি পরিবারের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি এখন লটকন।

লটকন চাষ করে ভাগ্যের চাকা ঘোরানোর পাশাপাশি বেকার সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে পেয়েছেন অনেকে। রায়পুরায় মরজালে শিবপুর ও বেলাবো উপজেলার লাল রঙের উঁচু মাটিতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও খনিজ উপাদান বিদ্যমান থাকায় এখানকার মাটি ও আবহাওয়া লটকন চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এছাড়া ও মনোহরদী উপজেলার কিছু কিছু এলাকার মাটিও লটকন চাষের উপযোগী। গাছের গোড়া থেকে শুরু করে প্রধান কান্ডগুলোতে ছড়ায় ছড়ায় ফলন হয়। নরসিংদীর লটকন খেতে সুস্বাদু হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জেলায় কদর বেড়েছে। ২০০৮ সাল থেকে দেশের চাহিদা মিটিয়ে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হয় নরসিংদীর লটকন। মৌসুমী এ ফলের বেচাকেনাকে ঘিরে জেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে রায়পুরার মরজাল ও শিবপুর উপজেলা চৈতন্য, কামারটেক, লটকনের প্রসিদ্ধ পাইকারি বাজার। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারি ক্রেতারা এসে এসব বাজার থেকে লটকন কিনে নিতে ছোটে আসছে। পর্যায়ক্রমে হাত বদল হয়ে রাজধানী ঢাকা থেকে এসব লটকন রফতানি হয়ে আসছিল বিদেশের বাজারে তবে করোনার প্রভাবে কিছুটা মন্দাভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে যার ফলে ন্যায্য দাম নিয়ে চিন্তিত লটকন বাগান চাষিদের। অনেকে সরাসরি জমি থেকে লটকন কিনে সরবরাহ করছেন দেশ-বিদেশের বাজারে।

কয়েক জন কৃষক কথা বলে জানা যায়, কম খরচে লাভজনক ফসলের মধ্যে অন্যতম লটকন। এই ফলের বাগান শুরু করতে প্রথমে খরচ বেশি পড়লেও পরবর্তীতে বিঘা প্রতি ৮-১০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয় না। সে তুলনায় লাভ বেশি হয়। বটিয়ারা গ্রামের চিকিৎসক কাজী কামাল হোসেন বলেন, স্থানীয় বাজার ছাড়াও লটকন গাছে ধরার পর জমিতেই পাইকারি বিক্রি করে দেওয়া যায় আমি একজন চিকিৎসক হলেও খুব সল্প পরিশ্রমেই লটকন বাগান থেকে অনেক টাকা আই করে থাকি প্রতিবছর এবার করোনার প্রভাবে ন্যায্য দাম নিয়ে চিন্তিত। পাইকাররা বাগান কিনে দেশে বিদেশের বাজারে লটকন পাঠিয়ে থাকেন । লটকন বাজারে আসতে শুরু করেছে মরজাল সমতা বাজার গুরে দেখা যায় বিভিন্ন সাইজের হওয়াই ১৫০০-৪০০০ টাকা মন বিক্রি হচ্ছে । কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর নরসিংদীর থেকে লটকন চাষ বৃদ্ধিতে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে চারা উৎপাদন করাসহ কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশের বাজারে রফতানি হওয়ায় লটকনের ন্যায্য দাম পাচ্ছেনা কৃষকরা করোনা প্রভাবে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
Website Design and Developed By Engineer BD Network