২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

 

ঠাকুরগাঁওয়ে গরুর অজ্ঞাত স্কিন রোগ: ২০ গরুর মৃত্যু

আপডেট: জুন ২৩, ২০২০

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

ফিরোজ সুলতান, ঠাকুরগাঁও থেকে : ঠাকুরগাঁও জেলায় গরুর অজ্ঞাত স্কিন রোগে কৃষকদের ভাবিয়ে তুলেছে। ২৩ জুন মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় ২০ টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। এতে আতংকিত হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা।

 

জেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তর জানায়, জেলায় ৫টি উপজেলায় এ পর্যন্ত ২ হাজার ২১৮টি গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে ১ হাজার ৮৪৫টি গরুকে। টিকা প্রদান করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৫শ গরুকে। এই রোগে আক্রান্ত গবাদি পশুর চামড়া ফুলে গুটি গুটির সৃষ্টি হয়। পরে এসব গুটি-ফেটে গিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ঘাঁয়ের মতো হয়ে যায়, তারপর আক্রান্ত পশুর জ্বর আসে। এক সময় পশুটি দূর্বল হয়ে ওজন হারায় এবং অবশেষে মারা যায়। আক্রান্ত হলে বাছুরের মৃত্যু ঝুঁকি বেশি বলেও জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

মশা ও মাশির মাধ্যমে এটি ছড়াচ্ছে বলে জানায় জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। এ রোগ জেলার সকল উপজেলাতে ছড়িয়ে পরেছে। এ অবস্থায় সামনে কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে মারাত্মক দুশ্চিন্তায় গরু খামারীরা। প্রাণি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত বছর অক্টোবরে ভারত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করা এই আফ্রিকান ভাইরাসটির সংক্রমণ এবার ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ দফতর থেকে বলা হয়, কয়েক সপ্তাহ ধরে গরুর মধ্যে বিরল এই ভাইরাসটি ছড়িয়েও পড়েছে। এই অসুখকে ‘লাম্পি স্কিন ডিজিস’ বলে অভিহিত করছেন প্রাণি বিশেষজ্ঞরা, যা সাধারণত এক ধরনের আরএনএ ভাইরাসের সংক্রমণে হয়ে থাকে। সদর উপজেলার বাহাদুরপাড়ার কৃষক গোলাম রসুল জানান, তার বেশ কয়েকটি গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়। পরে সদর উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসে নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন। বর্তমানে তার গরু অনেকটা সুস্থ হয়েছে।

একইভাবে সদর উপজেলার পাহারভাঙ্গা গ্রামের সিদ্দিকুল ইসলাম ও ফকদনপুর গ্রামের কৃষক সাখাওয়াত হোসেন জানান, তাদের বেশ কয়েকটি গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়। পরে গরুগুলি দুর্বল হয়ে পরলে তাদের উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করান। পরে গরুগুলি সুস্থ হয়ে ওঠে। সদর উপজেলার পৌর এলাকার বকসি পাড়া গ্রমের খামারি মোস্তাফিজুর জানান, তার খামারে সাতটি গরু এই রোগে আক্রন্ত হয়েছে। যার মধ্যে চারটি গরু মোটামুটি সুস্থ হলেও তিনটির অবস্থা এখনও খারাপ। কয়েকটি গরুর শরীরের গোটা ফেটে গিয়ে বড় বড় ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। তবে তিনি সরকারি পশু চিকিৎসালয়ে না গিয়ে বাইরের ভেটেরেনারি সার্জনদের দিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন। আক্রান্ত গরুর চিকিৎসায় অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: আলতাফ হোসেন জানান, এ রোগের সুনির্দিষ্ট কোনও মেডিসিন নেই। এর চিকিৎসায় গোটপক্স ভ্যাক্সিন প্রয়োগে ফল পাওয়া যাচ্ছে। আক্রান্ত পশুর লক্ষণ অনুযায়ী আমরা প্যারাসিটামল, এন্টিহিস্টামিন ও সোডা প্রয়োগ করে ইতিবাচক ফল পাচ্ছি। তবে আক্রান্ত পশু সুস্থ হতে এক থেকে দেড় মাস সময় লাগাতে পারে। এছাড়াও এ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য জিংক ও ভিটামিন সি দেওয়া হচ্ছে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
Website Design and Developed By Engineer BD Network