১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার

 

যুদ্ধবিমান পাঠাচ্ছে ভারত, লাদাখে শক্তি বাড়াচ্ছে চীন

আপডেট: জুন ২০, ২০২০

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

নেক্সটনিউজ ডেস্ক: বিরোধপূর্ণ কাশ্মির অঞ্চলের লাদাখ সীমান্তে চীন ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছেই। গেল সোমবার রাতে সেখানে সামরিক পরাশক্তির দেশ দুটির সেনা সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনা ও ৪৩ জন চীনা সৈন্য নিহত হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। তবে প্রায় সমান শক্তিধর রাষ্ট্র দুটি কেউই আগ বাড়িয়ে যুদ্ধে জড়াতে চায় না। উভয়েই যুদ্ধ এড়াতে চায়। দুই দেশই ভালো করে জানে, তাদের মধ্যে যুদ্ধ বাঁধলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে।

তবে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকার ওই সংঘর্ষের পর ভারত ও চীনের মধ্যকার উত্তেজনা কিছুটা কমলেও সমস্যা সমাধানের কোনও লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না।

গত বুধবার ও গতকাল বৃহস্পতিবার টানা দুইদিন ভারত-চীন মেজর জেনারেল পর্যায়ের বৈঠকেও শান্তির কোনও ইঙ্গিত নেই। দুই বৈঠকই ব্যর্থ হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রায় ৬ ঘণ্টাব্যাপী চলা বৈঠকেও সুরাহা খুঁজে বের করতে পারেনি কোনও পক্ষই। বরং লাদাখ সীমান্তে এরইমধ্যে শক্তি বাড়াচ্ছে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি।

পাল্টা জবাব হিসেবে গালওয়ান উপত্যকায় যুদ্ধবিমান নামাতে শুরু করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। দেশটির বিমানবাহিনীর প্রধান আর কে এস ভাদুরিয়া দুদিনে ঝটিকা সফরে লে ও শ্রীনগরের বিমানবাহিনীর ঘাঁটি পরিদর্শনের পরই যুদ্ধবিমান নামানোর এ তৎপরতা শুরু হয়েছে।

ভারত সরকারের পক্ষ থেকে দেশটির বিমানবাহিনীকে চূড়ান্ত সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। যেকোনও ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ফরোয়ার্ড বিমান ঘাঁটিগুলোতে যুদ্ধবিমান মোতায়েন প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ভারতীয় সামারিক বাহিনীর বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের দিকে কয়েক কিলোমিটার ঢুকে অস্থায়ীভাবে আস্তানে গেড়েছে চীনা সৈন্যরা। দুই দফা বৈঠকের পরও চীনা সেনারা ওই এলাকা ছাড়তে নারাজ। সেনা ও কূটনৈতিক পর্যায়ের বৈঠকের মাধ্যমে সংকট কাটানোর চেষ্টা যেমন হচ্ছে, একইভাবে সামরিক প্রস্তুতিও চলছে জোরেসোরে।

এদিকে চীনের কড়া অবস্থান ও শক্তি বৃদ্ধির জবাব হিসেবে বৃহস্পতিবার ১২টি সুখোই ও ২১টি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান চেয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাব জমা দিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। যা কিনতে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে।

সম্প্রতি ভারত লাদাখের একেবারে প্রত্যন্ত এলাকায় একটি নতুন রাস্তা নির্মাণ করেছে। যাতে করে সীমান্তে কোনও সংঘর্ষ হলে দিল্লি খুব সহজেই সেখানে সৈন্য ও প্রয়োজনীয় মালামাল পাঠাতে পারবে। ভারত ওই এলাকার অবকাঠামো নতুন করে ঢেলে সাজানো শুরু করার পরই চীন ক্ষিপ্ত ও ক্ষিপ্র আচরণ করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

অপরদিকে ভারত বরাবরই অভিযোগ করে আসছে, চীন তাদের ৩৮ হাজার বর্গকিলোমিটার ভূখণ্ড দখল করে রেখেছে। গত তিন দশকে বিরোধপূর্ণ ভূখণ্ড ও সীমান্ত সংকট নিয়ে বহুবার আলোচনা হয়েছে। চূড়ান্ত সমঝোতা আসেনি কখনোই।

সবশেষ প্রায় ৪৫ বছর আগে ১৯৭৫ সালে চীন-ভারতের মধ্যে সামরিক সংঘাত হয়েছিল। সেবার অরুণাচল প্রদেশে ভারত-চীন সীমান্তের খুব কাছে চীনা বাহিনীর চালানো এক হামলায় ভারতের আসাম রাইফেলসের ৪ জওয়ান নিহত হয়েছিল। চীন-ভারতের মধ্যে একমাত্র যুদ্ধটি হয়েছিল ১৯৬২ সালে। সেবার চীনের কাছে পরাজিত হয়েছিল ভারত।

 

নেক্সটনিউজ/জে.আলম

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
Website Design and Developed By Engineer BD Network