২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

 

যমুনা নদীর ভাঙনে গৃহহীন হচ্ছে পূর্বপাড়ের মানুষ

আপডেট: জুলাই ৪, ২০১৯

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
নেক্সট নিউজ প্রতিবেদকঃ

প্রমত্তা যমুনা নদীর তীব্র ভাঙনে প্রতিদিন গৃহহীন হচ্ছে যমুনা পূর্ব পাড়ের মানুষ। নদীতে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শতাধিক বড়-ছোট পাঁকা ও আধাপাঁকা স্থাপনাসহ ঘর বাড়ি নদী গর্বে চলে গেছে। আরো তিনশতাধিক ঘর-বাড়ি যমুনার ভাঙনের কবলে রয়েছে। যদিও ভাঙনরোধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ড।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের টাঙ্গাইলের প্রকৌশলীদের দায়িত্বহীনতার কারনে দিনদিন ভেঙে যাচ্ছে নতুন নতুন ঘরবাড়ি।

সরেজমিনে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী, গাবসারা ও অর্জুনা ইউনিয়নের গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। তবে গোবিন্দাসী ইউনিয়নের খানুরবাড়ি, কষ্টাপাড়া ও ভালকুটিয়া এলাকায় কয়েকদিনে শতাধিক ঘর-বাড়ি যমুনা গর্বে চলে গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার গোবিন্দাসী হতে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত প্রায় ১৮টি বালুর ঘাট তৈরি করেছে ক্ষমতাশীল বালু ব্যবসায়ীরা। তৈরিকৃত এই ঘাট থেকে শত শত ট্রাকযোগে সরকারি রাজস্ব ছাড়াই বালু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করা হচ্ছে।
এছাড়া যমুনা নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে ভিট বালু উত্তোলণ করা হচ্ছে।

জানা গেছে, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে চারটি ইউনিয়ন যমুনা নদী ঘেরা। ২০১১ সালে গোবিন্দাসী ইউনিয়নের খানুরবাড়িসহ কয়েকটি গ্রামে তীব্র ভাঙন শুরু হয়। যা বর্তমানে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। নদীতে এই ভাঙনরোধে স্থানীয়রা একাধিকবার মানববন্ধন, স্বারকলিপিসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করেছে। যদিও এসব কর্মসূচী পালনে ফলাফল শূন্য।  এতো কর্মসূচী পালনের পরেও এখন পর্যন্ত নদী ভাঙনরোধে কার্যক্রর কোন উদ্যোগ নেয়নি টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ড। এই উপজেলার চারটি ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ভাঙন কবলের স্বীকার।

গত কয়েক বছরে যমুনা নদীর ভাঙনে বেশ কয়েকটি গ্রাম মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে। ভেঙে গেছে গোবিন্দাসী হতে বঙ্গবন্ধু সেতু গাইড বাঁধ। এছাড়া প্রতিবছরই নতুন নুতুন এলাকায় আঘাত আনছে প্রমত্তা যমুনা। এতে গৃহহীন হচ্ছে শত শত পরিবার। যমুনা নদী অব্যাহত ভাঙনে ক্রমশঃ পূর্বদিকে ধাবিত হচ্ছে। মুল নদীতে জেগে উঠছে বিশাল বিশাল চর। যদিও ভাঙন কবলিত মানুষের দাবী অব্যাহতভাবে যমুনা নদী হতে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলণের কারণে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে। এতে নদী কয়েকটি চ্যানেলে রুপ নিচ্ছে।

খানুরবাড়ি গ্রামের আল মামুন জানান, ত্রিশ বছরের অধিক সময় ধরে এখানে বসবাস করছি। গত বছর বাড়ির কিছুটা অংশ ভেঙে গেছে। এবছরও বাড়ির অর্ধেক যমুনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বাড়ি হতে নদীর দুরত্ব ছিল প্রায় ৩কিলোমিটার। নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে এমন ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।

ভাঙন কবলিত অনেকেই জানান, সম্প্রতি যমুনা নদীর ভাঙনে খানুরবাড়ি, কষ্টাপাড়া ও ভালকুটিয়া গ্রামের ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। একদিকে অপরিকল্পিতভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন অন্যদিকে নদী শাসন বা খনন না করায় যমুনা নদীতে ভাঙন অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় এবার ভয়াবহ রুপ নিচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ জানান, উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে যমুনা নদী ভাঙনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। অর্জূনা ইউনিয়নের কুঠিবয়ড়া এলাকায় গাইড বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে।

টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, যমুনা নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাঙনের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।

এছাড়া ভাঙন এলাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সরেজমিন পরিদর্শন করবেন। এরপর ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
Website Design and Developed By Engineer BD Network