২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

 

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ছাড়াই কেনাকাটা

আপডেট: মে ১১, ২০২০

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

অমর চাঁদ গুপ্ত, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) খেকে : সরকারি নিদের্শনা মোতাবেক দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় গত রবিবার (১০ মে) বিভিন্ন বিপণীবিতান ও দোকানপাট খেলা হয়েছে।

দীর্ঘদিন পর দোকান চালু হওয়ায় ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কোন বিপণী বিতান কিংবা দোকানপাটের সামনে জীবাণুনাশক ছিটানোর ব্যবস্থা যেমন ছিল না, তেমনি নিরাপদ সামাজিক দূরত্বের বালাইও ছিল না। মেনে চলা হয়নি স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বিধিগুলোও।
গতকাল সোমবার সকাল ১০ টা থেকে ফুলবাড়ী পৌর শহরের বিভিন্ন বিপণীবিতান, শপিংমল, কাপড়ের মার্কেট ও ব্যবস্থাপ্রতিষ্ঠান খোলা শুরু হয়। শহরের প্রধান ব্যবসাকেন্দ্র ফুলবাড়ী বাজার কাপড় মার্কেট, গামার গলি মার্কেট, কালীবাড়ী, নিমতলা মোড়, বাসষ্ট্যান্ড, রেল ঘুমটি মোড়, ননীগোপাল মোড়, মুড়িহাটি বাজার, বাসনপট্টি, ঢাকা মোড়, উর্ব্বশী মার্কেট, টিটিই মোড়সহ প্রতিটি সড়কের পাশের দোকানগুলোতে ধীরে ধীরে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে।

এ সময় শহরের নিমতলা মোড় থেকে বাজার, বাসষ্ট্যান্ড থেকে টিটিই মোড়, ননীগোপাল মোড় থেকে বাংলাস্কুল মোড়, ঢাকা মোড় থেকে রেল ঘুমটিসহ শহরের পুরো ব্যবসাপ্রধান কেন্দ্র এলাকার সড়কে যানজট দেখা দেয়।
শহরের মুড়িহাটি এলাকায় একটি জুতার দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মহিদুল ইসলাম নামের একজন জুতা ক্রেতা বলেন, ‘জরুরি কাজ ছাড়া কি বাজারে আসি? এমনিতেই রোজার মাস। তার ওপর বিকেল চারটা পর্যন্ত দোকান খোলা। এই সময়টা হওয়ায় দুপুরে একসঙ্গে মানুষজনের ভিড় লেগে গেছে।’

ইলেক্ট্রিনিক্স মার্কেট হিসেবে পরিচিত নিমতলা মোড় এলাকার জননী মার্কেটে গিয়ে যায়, মার্কেটের প্রায় সবগুলোই দোকান খোলা হয়েছে। মার্কেটের ভেতরে প্রবেশকালে প্রধান ফটকে জীবাণুনাশক স্প্রে করার কোন ব্যবস্থা কিংবা হাত ধোয়ার ব্যবস্থা নেই। মার্কেটের ভেতরে অবাধে ঢুকছেন ক্রেতারা। নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করছেন না কেউ।

শহরের গামার গলি ও বাজার কাপড়পট্টি এলাকায় কাপড়সহ অধিকাংশ দোকানপাটেও ক্রেতাদের বেশ ভিড়। এখানেও কোন দোকনের সামনে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা নেই, নেই জীবাণুনাশক স্প্রে করার ব্যবস্থা। ছোটবড় সব দোকানেই মানুষ গা-ঘেঁষাঘেঁষি করে কেনাকাটা করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মুড়িহাটি এলাকার একজন জুতা ব্যবসায়ী বলেন, ‘সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকলে ব্যবসা করা সম্ভব নয়। কেননা, একটি দোকানে পাশাপাশি বসে থাকলে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ জন বসতে পারবেন। কিন্তু সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখলে হয়তো দুইজন ক্রেতা বসতে পারবেন। এতে কি ব্যবসা হয়?’

বাজার কাপড়পট্টিতে মানুষের ঠাসাঠাসি, গাদাগাদি। এখানে এক কাপড় দোকান মালিক মো. বাচ্চু বলেন, ‘দোকান না খলেই-বা কী করি। কর্মচারীদের অবস্থা খুব খারাপ। বসিয়ে বসিয়ে বেতন দিতেও পারছি না। ইচ্ছা না থাকলেও কিছুটা কেনাবেচার জন্য দোকান খুলে বসেছি।’
একই এলাকার গার্মেন্টস দোকানী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘কী আর করব? দোকান না খুলে বসলে আমাদের চলবে না। যতটুকুই বিক্রি হোক না কেন, বেচাকেনা করতে হবে।’

থানা ব্যবসায়ী সমিতির অন্যতম সদস্য জেলা পরিষদ সদস্য আলহাজ্ব মো. কামরুজ্জামান শাহ কামরু ও মো. আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে সভা করে মার্কেটের প্রবেশমূখে জীবাণুনাশক স্প্রে, হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে। এরপরও যদি এগুলো মানা না হয় তবে মানানোর ব্যবস্থা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম চৌধুরী বলেন, ‘ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। প্রতিটি মার্কেট ও দোকানের সামনে হাত ধোয়াসহ সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকবে। সেই সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা করতে হবে।’#

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
Website Design and Developed By Engineer BD Network