আপডেট: জুন ১১, ২০২০
নেক্সটনিউজ প্রতিবেদক,টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার পাকুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীর কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যপারে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে স্থানীয়রা। অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি যাচাই বাছাই করে দেখতে উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার শরীফ নজরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আগামী ১৫ জুন এ ব্যপারে শুনানী হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানা গেছে।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, পাকুটিয়া ইউনিয়নের বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীর প্রায় এক হাজার ২৫০ টি কার্ড বিতরণের আগে তাদের কাছে দুইশত টাকা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে কার্ড দেয়া হয় না। ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদারের মাধ্যমে এ কাজ করেন চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান। চাপের মুখে বাধ্য হয়ে অনেকেই দুইশত টাকা করে চৌকিদারের কাছে প্রদান করতে বাধ্য হয় ভুক্তভোগীরা। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করা হলে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে কার্ডধারীদের টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন।
স্থানীয় হবিুবর খলিফা, আমির খসরু, শামিম খান, এডভোকেট আজহারুল ইসলাম অভিযোগ করেন, নতুন কার্ডধারীদের কাছ থেকে তিন হাজার টাকা করে নেয়া হয়। অনেকের কাছ থেকে কার্ডেও জন্যে ৫ হাজার টাকা পর্যন্তও হাতিয়ে নিয়েছে চেয়ারম্যান। অনেক সময় নিজে আবার চৌকিদারের মাধ্যমে এসব অর্থ হাতিয়ে নেয়া হয়। স্থানীয় ইউসুফ আলী অভিযোগ করেন, তার স্ত্রীর জন্যে মাতৃকালীন ভাতার কথা বলে প্রায় দেড় বছর আগে এক হাজার টাকা নেয়া হয়। কিন্ত আজও পর্যন্ত মাতৃকালিন ভাতার কার্ড পায়নি।
এসব অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ভুক্তভোগীরা গত ২৭ মে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। স্থানীয় রাউতারা গ্রামের ইনসান আলী খলিফা, পাইকপাড়া গ্রামের কালু মিয়া, গ্রামের লাল মিয়া বলেন, চৌকিদার দুইশ টাকা করে নিয়া বই জমা নিছে। পাকুটিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম মিয়া বলেন, বয়স্ক লোকদের কাছ থেকেও দুইশ টাকা করে নিয়েছেন পাকুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। চৌকিদারের মাধ্যমে টাকাগুলো উত্তোলন করা হয়।
বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হলে তিনি টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন। নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট আজহারুল ইসলাম বলেন, বয়স্ক মানুষদের কাছ থেকে দুইশত টাকা করে নিয়ে আত্মসাত করেন চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান। কার্ড করার সময়ও তিন হাজার টাকা করে নেয়া হয়।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে পাকুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, এ সব অভিযোগ সত্য নয়। আমার মাধ্যমে কোন লেনদেন হওয়ার সুযোগ নাই। ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা লেনদেন হয়ে থাকে। স্থানীয় একটি মহল আগামী নির্বাচনে আমাকে পরাস্ত করতে মাঠে নেমেছে।
এ ব্যাপারে নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ ফায়েজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারপরও অভিযোগ থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।