২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

 

ফুলবাড়ীতে কৃষকের ধান কাটাই-মাড়াই করছে ছাত্রলীগ-যুবলীগ-স্বেচ্ছাসেবকলীগ

আপডেট: মে ৮, ২০২০

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

অমর চাঁদ গুপ্ত অপু, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) থেকে : দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ধান কাটা মজুর সংকট দেখা দেওয়ায় কৃষকদের বাড়ী বাড়ী দিয়ে নিজ স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে ক্ষেতের ধান কাটাই মাড়াই করে কৃষকের গোলায় ধান তুলে দিচ্ছেন উপজেলা ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মুশফিকুর রহমানের তত্ত্বাবধানে এবং উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মঞ্জু রায় চৌধুরীর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় উপজেলা ছাত্রলীগের ৩০ জন, আওয়ামী যুবলীগের ২০ জন এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের ১০ জনের সম্বনয়ে ৬০ জনের ধান কাটাই-মাড়াইয়ের জন্য একটি স্বেচ্ছাশ্রম দল গঠন করা হয়েছে।

সরেজমিনে শুক্রবার সকাল ১০ টায় উপজেলার এলুয়ারী ইউনিয়নের জোয়াড় গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, স্বেচ্ছাশ্রমে ধান কাটাই-মাড়াইয়ের দলটি দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গ্রামে ওয়াহেদুল ইসলামের ৬০ শতাংশ এবং আব্দুল বারীর ২০ শতাংশ জমির ধান কাটাই-মাড়াইসহ গোলায় ধান তুলে দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে কৃষক ওয়াহেদুল ইসলাম বলেন, ধান কাটা মজুর নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছিলেন। এ সময় ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বিষয়টি জানতে পেরে আজ (গতকাল শুক্রবার) সকাল ৯ টায় ৬০ জনের ধান ধাটার দল নিয়ে হাজির হন বাড়ীতে। লোকজন দেখে মনে হয়েছিল তারা মজাক করছেন। কিন্তু সত্যি সত্যি যখন জমিতে নেমে ধান কেটে ধান মাড়াই মেশিনে দিয়ে মাড়াই করে বস্তায় নিয়ে বাড়ীতে পৌঁছে দিতে শুরু করেন তখন মনে হয়েছে সত্যি সত্যি এরাই তো মানুষের জন্য কাজ করবে। যেসব ছেলেরা লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকে তারা তো কোনদিন মাঠে কাজ করার কোন অভিজ্ঞতা নেই। কিন্তু অভিজ্ঞতা না থাকলেও তাদের ধান কাটাই-মাড়াইসহ বস্তা ভর্তি ধান গোলায় দিয়ে আসা পর্যন্ত সবকিছুই যেন এক অন্য রমক দৃশ্য।
আরেক কৃষক আব্দুল বারী বলেন, তার ২০ শতাংশ জমির ধান নিমিষেই কাটাই-মাড়াই করে দিয়ে এই দুর্দিনে অনেক ভালো কাজ করেছে ছেলেরা। মজুর দিয়ে ধান কাটাই-মাড়াই করতে গিয়ে অনেক টাকা খরচ হয়ে যেতো। এতে ঋণ দেনায় পড়তে হতো। কিন্তু ছেলেদের কারণে সবকিছু থেকেই মুক্তি পেয়েছি। আল্লাহ ওমাক ভালো করুক।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, কৃষকের দুর্দিনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বসে থাকতে পারে না। কিছু একটা করা প্রয়োজন এই চিন্তা চেতনা থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান বাবুল ও ভাইস চেয়ারম্যান মঞ্জু রায় চৌধুরীর সাথে পরামর্শে ধান কাটার সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠে নেমেছেন তারা।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মঞ্জু রায় চৌধুরী বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান বাবুলের দিকনিদের্শনায় দল গঠন করে স্বেচ্ছাশ্রমে কৃষকদের ধান কেটে দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মুশফিকুর রহমান বাবুল বলেন, মজুরের অভাবে কোন কৃষকের ধান ক্ষেতে নষ্ট হবে এটা হতে পারে না। যেকোনভাবেই কৃষকের ধান কেটে তার গোলায় পৌঁছে দেওয়া হবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে সাবেক গণশিক্ষা মন্ত্রী বর্তমান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপি মহোদয়ের সার্বিক দিকনিদের্শনায় স্বেচ্ছাশ্রমে ধান কাটাই-মাড়াই কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। কৃষক পেলেই তার বাড়ীতে হাজির হয়ে ধান কেটে গোলায় তুলে দেওয়া হবে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
Website Design and Developed By Engineer BD Network