আপডেট: অক্টোবর ৬, ২০১৯
নেক্সট নিউজ প্রতিবেদকঃ জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০১৯ মাধ্যমিক পর্যায়ে সিরাজগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন সহকারী শিক্ষক নাসিমা খাতুন রুপা। তিনি উল্লাপাড়া উপজেলার একমাত্র নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এইচ.টি. ইমাম গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক। এর আগে নাসিমা খাতুন রুপা উল্লাপাড়া উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়ে জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের বাছাই পর্বে অংশ গ্রহণ করেন। সেখানেও তিনি জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে মনোনীত হন। শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হবার গৌরব অর্জন করায় সিরাজগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ২০১৯ এর শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করেন । নাসিমা খাতুন রুপা শিক্ষকতার পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে অসহায় দরিদ্র শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার খরচ বহন করেন। তার লেখা বিভিন্ন ছোট গল্প ও কবিতা রয়েছে।
নাসিমা খাতুন রুপার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আমাদের সমাজে অনেক মেধাবী দরিদ্র শিক্ষার্থী রয়েছে তারা অর্থের অভাবে লেখাপড়া করার সুযোগ পায় না। আমরা যদি আমাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে তাদের একটু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই তাহলে আমাদের সমাজ হবে সুশিক্ষিত হবে। পাশাপাশি অর্থের অভাবে কারোর লেখাপড়া বন্ধ হবে না।
নাসিমা খাতুন রুপা বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের বাউগান গ্রামে এক সম্ভান্ত্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন বেলকুচি উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক এবং বি.আই.ডি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি বাবা মায়ের দ্বিতীয় সন্তান তিনি ছাড়াও তার ৩ বোন এবং এক ভাই রয়েছে। শৈশব কাল সম্পর্কে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, শৈশব থেকেই গৃহকর্তা দাদা, বাবা, চাচাদের কড়া শাসন, আর অজপাড়া গাঁয়ের নানা কুসংস্কার এবং প্রচলিত সমাজের প্রতিকূলতা মধ্যেই বেড়ে উঠেছেন। তিনি বলেন, সে কি বকুনি, আর মনে পড়ে মায়ের লাঠিপেটা, পড়তে বসলে দাদির বাতি নিভে দেওয়া সবমিলিয়ে বারংবার অশান্ত মনকে শান্তনা দিতাম, মনে মনে বলতাম অশান্ত পরিশ্রান্ত জীবনের হয়তো একদিন সমাপ্তি ঘটবে। এভাবে কেটে গেলো শৈশব ও কৈশোর কাল। ১৯৯৫ সালে ডিগ্রি পাশ করার পর পারিবারিকভাবে উল্লাপাড়ার রামকান্তপুর গ্রামে মোঃ রফিকুল ইসলামের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার স্বামী পেশায় একজন ব্যবসায়ী। এরপর ১৯৯৮ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে তৎকালীন হামিদা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ বর্তমান এইচ. টি. ইমাম গার্লস স্কুল এন্ড কলেজে স্কুল শাখায় নিয়োগ পান। সংসার জীবনে শিক্ষকতা ও লেখাপড়া সবগুলো একসাথে চালিয়ে যান। তিনি কখনো থেমে থাকেননি। এরপর সে ২০০৩ সালে বিএড এবং ২০০৮ এমএড ডিগ্রি অর্জন করেন। কর্মজীবনে এইচ. টি. ইমাম বালিকা বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষকতা এই মহান পেশায় কর্মরত রয়েছেন।
ডেইলি নেক্সট নিউজ/আবু বকর সিদ্দিক।