সরেজমিন জানা গেছে, বানিয়ানগর মুরগিটোলা মোড়ে ছয়তলা এ বাড়ির প্রথম তিনটি ফ্লোরের মালিক রুপন। আর ওপরের তিনটির মালিক এনামুল। আওয়ামী লীগের এ নেতার বাসায় অভিযানে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুজ্জামানের সামনে ভল্ট খোলা হয়। এ সময় নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার ছাড়াও দুটি পিস্তল, দুটি এয়ারগান ও একটি শটগান জব্দ করা হয়।র্যাব জানায়, রাজধানীতে এনামুলের অন্তত ১৫টি বাসার সন্ধান পেয়েছে তারা। তবে ওয়ারী, সূত্রাপুর, গেণ্ডারিয়া, বংশাল, কোতোয়ালি এলাকায় এনামুল ও রুপনের আরও ৩০টি বাড়ি থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। সপ্তাহখানেক আগে কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক সাঈদের সঙ্গে সিঙ্গাপুর হয়ে থাইল্যান্ড গেছেন এনামুল। তিনি সাঈদের ক্যাসিনো, চাঁদাবাজি ও বাড়ি দখল সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য। তিন-চার বছর আগে তারা হঠাৎ করে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি কেনা শুরু করেন। সূত্রাপুরের বাড়িটি দেড় বছর আগে হারুনুর রশীদ নামে একজনের কাছ থেকে তারা কিনেছেন। সূত্রাপুরের এ বাড়িতে অভিযান শেষে এনামুলের বাকি দুটি ভল্টের সন্ধানে আরও দুটি বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। এনামুলের কর্মচারী আবুল কালাম ওরফে কালুর নারিন্দার ৮৩/১ লালমোহন দাস লেনের চতুর্থ তলার বাসা থেকে একটি ভল্ট জব্দ করা হয়। ওই ভল্ট খুলে পাওয়া যায় আরও দুই কোটি টাকা। ওই বাসার আলমারিতে রাখা একটি ব্যাগের ভিতর থেকে একটি পিস্তল ও ১৮ রাউন্ড গুলিও জব্দ করা হয়। এরপর এনামুলের বন্ধু হারুনুর রশিদের ২২/১ শরৎগুপ্ত রোডের তিনতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে জব্দ করা হয় আরেকটি ভল্ট। এখানে পাওয়া যায় আরও ২ কোটি টাকা। এনামুলের কর্মচারী কালামের স্ত্রী শিলা রহমান জানান, তার স্বামী আওয়ামী লীগ নেতা এনামুলের বিভিন্ন কনস্ট্রাকশন সাইট তদারক করেন। রবিবার এনামুলের বডিগার্ড পাভেল এসে একটি ব্যাগ এবং ভল্টটি রেখে যান। এনামুলের বন্ধু হারুনের স্ত্রী লিপি জানান, দুজন লোক এসে শনিবার দুপুরে তাদের বাসায় ওই ভল্ট রেখে যান। ভিতরে কী ছিল তা তারা জানতেন না। স্থানীয়রা জানান, ওয়ারী, সূত্রাপুর, গে ারিয়া, বংশাল, কোতোয়ালি থানা এলাকায় এনামুল ও রুপনের অসংখ্য বাড়ি থাকলেও তারা মূলত কোন বাড়িতে থাকতেন তা কেউ জানে না। তারা যেসব বাড়ির মালিকানা দাবি করেন, সেগুলো কেনার নাম করে অল্প কিছু টাকায় বাড়ির মালিকের কাছ থেকে বায়না করতেন। এরপর অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বিনা টাকায় পুরো বাড়ি দখল করে নিতেন। যেসব বাড়ি কাগজপত্রে ঝামেলাপূর্ণ মনে করতেন, সেসব বাড়ি তারা টার্গেট করতেন।
ডেইলি নেক্সট নিউজ/ফয়সাল।