৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

 

মুখ বন্ধ রাখতে বারবার হামলা হচ্ছে: নুরুল হক

আপডেট: আগস্ট ২১, ২০১৯

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

নেক্সট নিউজ প্রতিবেদকঃ এ পর্যন্ত সাতবার হামলার শিকার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক। তাঁর মতে, কোটা সংস্কারের দাবিতে গঠিত বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ বিরুদ্ধ মতপ্রকাশের মঞ্চ হয়ে উঠুক—সরকার বা সরকারি দলের ছাত্রসংগঠন তা চায় না। এই চিন্তা থেকে তাঁর ওপর বারবার হামলা হচ্ছে।

সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা মনে করছেন, আইন করে, মামলা দিয়ে ও হামলা করে সাধারণ মানুষের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি তৈরি হলে সাধারণ মানুষ আবার প্রতিবাদও করছে। এর বড় উদাহরণ হচ্ছে, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলন। দুটি আন্দোলনেই তাঁর সম্পৃক্ততা ছিল।

নুরুল হক গতকাল শনিবার গণমাধ্যামকে বলেন, তাঁর ওপর আওয়ামী লীগ, ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সাতবার হামলা চালিয়েছেন। বিষয়টি তিনি পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করেছেন। ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর কাছেও নির্বাচনপূর্ব হামলার বিচার দাবি করেছেন। কিন্তু কারও শাস্তি হয়নি।

অভিযোগ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী গণমাধ্যামকে বলেন, নুরুল হক ছাত্রলীগের পদধারী নেতা ছিলেন। ছাত্রলীগের সঙ্গে তাঁর কোনো বিরোধ নেই। তাঁকে যদি টার্গেট করে ছাত্রলীগ হামলা করত, তাহলে এভাবে ঘুরে বেড়াতে পারতেন না।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভিপি হওয়ার পর রাজনৈতিক দল গঠনে তাঁর কৌশলটা ভুল। নুরুলের জায়গা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। কিন্তু তিনি বগুড়াসহ বিভিন্ন জায়গায় গেছেন। ভবিষ্যতে নির্বাচন করবেন—এমন একটা ভাব। এতে স্থানীয় লোকজন বিরক্ত হয়ে পটুয়াখালীতে মারধর করতে পারে।’ ছাত্রলীগের কাছে অভিযোগ জানালে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানান ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রেজওয়ানুল হক।

সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৩০ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ছাত্রলীগের একাধিক নেতা তাঁকে বেধড়ক পেটান। হামলার ছবি ছাপা হলেও সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। গত ২৪ জানুয়ারি বাংলা একাডেমিতে জড়ো হলে আবারও নুরুল হকের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালায়। ডাকসু নির্বাচনের দিন ১১ মার্চ ও ১২ মার্চ ভিপি নির্বাচিত হওয়ার পর টিএসসিতে আবারও তাঁর ওপর হামলা হয়। চলতি বছরের ২ এপ্রিল এস এম হলে নুরুল হকের ওপর ডিম নিক্ষেপ করা হয়। পরদিন বগুড়ায় ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ইফতারে অংশ নিতে গেলে তাঁকে মারধর করা হয়। গত ২৫ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাঁকে ধাওয়া দেওয়া হয়েছিল।

ডাকসু নির্বাচনের আগে-পরে সাতবার হামলা নুরুল হকের ওপর কোনো হামলার ঘটনায় প্রতিকার পাননি নুরুল হক পুলিশ বলছে, অভিযোগ পেলে, সত্যতা পেলে তারা ব্যবস্থা নেয়

নুরুল হক বলেন, মনোবল ভেঙে দিতে তিনিসহ অন্য নেতাদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। তবে মৃত্যুর ভয়ে তিনি ও সংগঠনের নেতা–কর্মীরা লুকিয়ে থাকবেন না। তিনি মনে করেন, ‘পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবস্থান বার্তা দিচ্ছে যে, আমাকে মারলে কারও কিছু হয় না। এ জন্য ভিপি হওয়ার আগেও মার খেয়েছি, এখনো মার খাচ্ছি।’

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রাব্বানী গণমাধ্যামকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই পক্ষের অতি উৎসাহে এমন ঘটনা ঘটেছে। হল প্রশাসনের বিষয়টি দেখার কথা। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।

 পুলিশের ভূমিকা প্রসঙ্গে নুরুল হক বলেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাদের ভূমিকা ছিল বাংলা সিনেমার পুলিশের মতো। ১৪ আগস্ট গলাচিপা থেকে দশমিনা যাওয়ার পথে উলানিয়া বাজারে তাঁর ওপর হামলা হয়। ঘটনার পর পুলিশ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে পুলিশই জানায়, মারধরের অভিযোগ তারা পায়নি।

নুরুল হকের ওপর হামলা হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে না—এমন নির্দেশনা আছে কি না, জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, কারও ওপর নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেলে এবং সত্যতা পেলে পুলিশ সব সময় ব্যবস্থা নেয়। তবে নুরুল হকের অভিযোগ, হামলাকারীরা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী, পুলিশ এটা জানার পর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
Website Design and Developed By Engineer BD Network