গোসলের দৃশ্য দেখে ফেলায় ক্ষোভে-লজ্জায় আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন তরুণী গৃহবধূ জান্নাতুল নাঈম সুখী। গেল রবিবার, এ ঘটনাটি ঘটেছে চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার ওয়ারুক এলাকায়।
কোরবানির ঈদের আগের দিন দুপুরে জান্নাতুল নাঈম সুখীর শ্বাশুড়ি পারুল বেগম ঈদের কেনাকাটা করতে হাজীগঞ্জ বাজারে যান। শ্বাশুড়িকে বিদায় দিয়ে সুখী ঘরের পাশের গোসলখানায় গোসল করতে যান। এ সময় একই বাড়ির হাসান নামের এক যুবক লুকিয়ে তার গোসলের দৃশ্য দেখে কটুক্তি করে। হাসান স্থানীয় বখাটেদের মাঝে বিষয়টি ছড়িয়ে দেয়। পরে, বিষয়টি সুখী সৌদিপ্রবাসী স্বামী রনিকে জানায়। ওই কথা মুঠোফোনে জেনে স্বামী রনি রেগে গিয়ে স্ত্রীর সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন।
পরে, রনি বিষয়টি তার শ্বাশুড়িকে অবহিত করেন। এদিকে, বিষয়টি জেনে সুখীর শ্বাশুড়ি পারুল বেগম দ্রুত বাড়িতে ছুটে আসেন। এসে দেখতে পান তার ঘরের আড়ার সাথে সুখী ফাঁস দিয়ে ঝুলে আছে। বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সুখীর আত্মহত্যার বিষয়টি মানতে নারাজ তার পরিবার। তাদের দাবি সুখীকে মেরে ফাঁস দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে সুখীর পরিবার।
সুখীর আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনার অভিযোগে হাসান নামের ওই যুবককে আসামি করে শাহরাস্তি থানায় মামলা দায়ের করেছেন গৃহবধূর শ্বাশুড়ি পারুল বেগম। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে অভিযুক্ত যুবক হাসান।
ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এবং অভিযুক্ত যুবক হাসানকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শাহরাস্তি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: শাহ আলম।
শাহরাস্তি উপজেলার ওয়ারুক পাটোয়ারী বাড়ির মৃত ইউসুফ পাটোয়ারীর পুত্র সৌদিপ্রবাসী তৌকির আহমেদ রনি (৩০) একই ইউনিয়নের রাঢ়া গ্রামের মশিউর রহমানের মেয়ে জান্নাতুল নাঈম সুখীকে (২২) বিয়ে করেন। বিয়ের আগে নিজেদের মধ্যে জানাশোনা থাকলেও পারিবারিক সম্মতিতেই তারা বিয়ে করেন। বিয়ের পরও সুখী চাঁদপুর সরকারি কলেজে লেখাপড়া চালিয়ে আসছিলেন। আর বিয়ের এক মাসের মাথায় রনি জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। রনি সৌদি আরবে পাড়ি দেয়ার পর থেকেই একই বাড়ির হারুন পাটোয়ারীর পুত্র হাসানের কু-দৃষ্টি পরে সুখীর দিকে।