আপডেট: জুন ২৭, ২০২০
মোঃ আজিজুল হক বাবু, নাগরপুর (টাঙ্গাইল) থেকেঃ একেতো আষাঢ় মাস তার উপরে প্রায় প্রতিদিনই ঝুমবৃষ্টি। আগের মত পরিচিত টুং টাং শব্দ ট্রি স্টল গুলোতে এখন আর নেই । করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাবেও বন্ধ নেই বাজারের চায়ের দোকানগুলো। বাজারের আনাচে-কানাচে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলছে চায়ের দোকান । কিন্তু দোকানগুলোতে কোভিড-১৯ মাহামারির কারণে চলছে ভিন্ন রকম দৃশ্য। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে কাচের চায়ের কাপের বদলে ব্যবহার করা হচ্ছে প্লাস্টিকের তৈরী কাপ যেগুলো ‘ওয়ান টাইম’ কাপ হিসেবে পরিচিত। যা প্লাস্টিকের তৈরী ও স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর।
চিকিৎসকদের মতে, প্লাস্টিকের কাপে চা খাওয়া একেবারেই ঠিক নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, প্লাস্টিকের মধ্যে থাকা ‘বিসফেনল’ নামের টক্সিন এ ক্ষেত্রে বড় ঘাতক। গরম খাবার বা পানীয় প্লাস্টিকের সংস্পর্শে এলে ওই রাসায়নিক খাবারের সঙ্গে মিশে। এটি নিয়মিত শরীরে ঢুকলে মহিলাদের ইস্ট্রোজেন হরমোনের কাজের স্বাভাবিকতা বিঘ্নিত হয়। পুরুষদের ক্ষেত্রে শুক্রাণু কমে যায়। হার্ট, কিডনি, লিভার, ফুসফুস এবং ত্বকও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। এমনকি স্তনক্যান্সারেরও ঝুঁকি রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার নাগরপুর টাঙ্গাইল আরিচা রোড সংলগ্ন এলাকা থেকে উপজেলা প্রশাসনের গেইটের সামনে পর্যন্ত যেসকল চায়ের দোকান রয়েছে তাদের আশপাশে যত্রতত্র ভাবে প্লাস্টিকের পরিত্যাক্ত কাপগুলো পড়ে আছে। এলাকার বিভিন্ন অলি গলিতে চায়ের দোকানগুলোতেও একই রকম অবস্থা। চা পান করার পরে ব্যবহারকারীরা যেখানে সেখানে ফেলে দিচ্ছেন পরিত্যক্ত কাপ। দোকানের আশেপাশে পরিস্কার রাখতে ওইসব কাপগুলো নির্দিষ্ট স্থানে না ফেলে যেখানে সেখানে ফেলছেন।
প্লাস্টিকের কাপগুলো পচনশীন না হওয়ার কারনে দীর্ঘসময়ে রয়ে যাচ্ছে ও বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি জমে তৈরী হচ্ছে মশা। যা থেকে মানব দেহ আঘাত হানতে পারে ডেঙ্গু ম্যালারিয়া সহ নানান রকম রোগের প্রভাব। ভারীবর্ষণে কাপগুলো ভেসে জমাট বাঁধছে ড্রেনে। নিয়মিত পরিস্কার না করায় পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাজারে স্থানীয় চা দোকানীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, করোনা ভাইরাসের কারণে ওয়ান টাইম গ্লাসে চা বিক্রি করছি, তবে যতটুকু পারি পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করি তবে অনেক কাস্টমার চা হাতে নিয়ে চলে যায় ওসকল কাপগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকে যেখানে সেখানে।
এ বিষয়ে নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান খান বলেন, আসলে প্লাস্টিকের তৈরী এসকল জিনিস ব্যবহার একেবারে নিষিদ্ধ। তবে ব্যবহারের পরে তা ব্যক্তি ইচ্ছায় নিরাপদ স্থানে কিংবা আগুনে পুড়ে ফেললে স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে না।
এ বিষয়ে নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম জানান, বর্তমানে আমাদের প্রত্যেকের উচিৎ নিজে থেকে সচেতন হওয়া। যারা এসকল প্লাস্টিকের কাপ যত্রতত্র ফেলছেন তাদের কে সতর্ক করা হবে।