১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

 

ফুলবাড়ীতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে, নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের

আপডেট: মে ২, ২০২০

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

অমর চাঁদ গুপ্ত, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) থেকে : দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর বিভিন্ন হাটবাজারে অস্বাভাবিক হারে চাল ও আটার দাম বেড়েছে। প্রতিকেজি চাল ১০ থেকে ১২ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি ডাল, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, আদার দামও বেড়েছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামাঞ্চলে জিনিসপত্রের দাম আরও বেশি। ফলে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। যদিও ব্রয়লার মুরগি ও সবজির দাম কমেছে।

সকালে ফুলবাড়ীর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি মোটা চাল ৩৮ থেকে ৪০ টাকার স্থলে ৪৫ থেকে ৪৭ টাকা। আটা খোলা প্রতিকেজি ২১ টাকার স্থলে ২৬ থেকে ২৮ টাকা, প্যাকেট প্রতিকেজি আটা ২৬ টাকার স্থলে ৩৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিকেজি কক মুরগি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, প্রতিকেজি রসুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা, প্রতিকেজি মসুর ডাল ১০০ থেকে ১১০ টাকা, প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা, আলু হল্যান্ড (কার্ডিনাল) প্রতিকেজি ২৪ থেকে ২৫ টাকা এবং প্রতি লিটার সোয়াবিন তেল ৯৫ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে ব্রয়লার মুরগির দাম অনেকটা কমে গেছে। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে কমে ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আকার ভেদে লাউ ৭ থেকে ১২ টাকা, প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ ৪০ থেকে কমে ২০ টাকা, প্রতিকেজি করলা ৩০ থেকে কমে ১৭ টাকা, প্রতিকেজি বেগুন ৩০ থেকে কমে ৫ টাকা, প্রতিকেজি শসা ১৫ থেকে কমে ৭ টাকা এবং প্রতি লিটার গাভীর দুধ ৫৫ থেকে কমে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ফুলবাড়ী সরকারি কলেজ মাঠে স্থানান্তরিক বাজারে কথা হয় আবুল কাশেম (৫০) নামের এক ক্রেতার সাথে। তিনি উপজেলার আলাদিপুর ইউনিয়নের ভিমলপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি একটি বেসরকারি কলেজের পিয়ন পদে চাকরি করেন। আবুল কাশেম বলেন, ‘অল্প বেতনে চাকরি, যা বেতন পাই, তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চলে। বেতনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে খরচ করি। কিন্তু চাল কিনতে এসে অবাক হলাম। প্রতি কেজি চালে ১০ থেকে ১২ টাকা বেড়েছে। করোনার কারণে এ মাসে অতিরিক্ত টাকা খরচ হবে। এ জন্য ঋণ করতে হবে।’

খুচরা চাল ব্যবসায়ী জয় প্রকাশ গুপ্ত বলেন, ‘আমরা চালের দাম বাড়ায়নি। বেশি দামে চাল কিনতে হয়েছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’

আটা উৎপাদনকারী লাভলী ফুড ইন্ডাষ্ট্রিজের স্বত্বাধিকারী অধ্যক্ষ মো. খুরশিদ আলম মতি বলেন, ‘এই মুহুর্তে মোকামে গমের দাম প্রতিমণে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদিত আটার দামও বেড়েছে।’

চালের আড়ৎদার হানিফ মিয়া বলেন, ‘মিল থেকেই বেশি দামে চাল কিনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ফুলবাড়ী শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, কোনো জিনিসের বৃদ্ধির কারণ নেই। সরকার পরিবহন বন্ধ রেখেছে। কিন্তু পণ্যবাহী পরিবহন চলছে। তাই করোনার দোহাই দিয়ে যাতে কেউ দাম বাড়াতে না পারে, সে জন্য প্রশাসনকে নজরদারি বাড়ানো দরকার।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুস সালাম চৌধুরী বলেন, ব্যবসায়ীদের নিয়ে এসব নিয়ে সভা করা হয়েছে। এরপরও যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে পণ্যের দাম বাড়ায়, তবে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
Website Design and Developed By Engineer BD Network