আপডেট: আগস্ট ১২, ২০২০
আমিনুল জুয়েল, নওগাঁ থেকে : প্রবাদে রয়েছে-আঙ্গুর ফল টক। কোন কাজ বার বার চেষ্টা করার পরও সম্পন্ন করতে না পারলেই এই বলি আওড়াই আমরা। তবে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের বাসিন্দা সামিউন নবী সামিমের উৎপাদিত আঙ্গুর ফল কিন্তু রসালো ও মিষ্টি।
সবুজ পাতার নিচে বাঁশের মাঁচায় থোকায় থোকায় ঝুঁলছে আঙ্গুর ফল। নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের পোষ্ট অফিস মোড় এলাকায় এমন দৃশ্যের দেখা মিলবে। দৃশ্যটি আপনার চোখ জুড়িয়ে দিবে। তরুণ উদ্যোক্তা ও আইনজীবী সামিম এই উপজেলায় তিনিই প্রথম মাচা পদ্ধতিতে আঙ্গুর চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। অল্প জায়গায় অধিক ফলন এবং দাম বেশি হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে এই ফলোর চাষ সম্প্রসারণ করা গেলে কৃষকরা লাভবান হবে বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ।
প্রকৃতপক্ষে আমাদের দেশে আঙ্গুরের চাষই একটি অকল্পনীয় বিষয়। কিন্তু এই অভাবনীয় বিষয়কে বাস্তবে রুপান্তর করেছেন তিনি। এই আঙ্গুর বাগানটি বিভিন্ন মহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে। তাঁর বাগান একনজর দেখতে ছুটে আসছেন এলাকার অনেকেই। নিজ চোখে আঙ্গুরের গাছ দেখে অবাক হচ্ছেন তাঁরা। কেউবা চাষ পদ্ধতি জেনে নিচ্ছেন। আবার কেউবা হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখছেন আঙ্গুরের গাছ ও ফল।
তরুণ উদ্যোক্তা সামিম জানান, ২০১৯ সালে রাজশাহী থেকে দুটি লাল ও দুটি কালো আঙ্গুরের চারা (কাটিং) নিয়ে আসি। পরে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনায় সেই চারা রোপণ করি। গত বছরের শেষের দিকে গাছে প্রথম ফল আসে। গত বছর প্রায় ছয় কেজি ফল পেয়েছেন তিনি। এবছরও ভাল ফলন হয়েছে। বাজারের কেনা আঙ্গুরের মতই সুমিষ্ট হওয়ায় এলাকায় হৈ-চৈ পড়ে যায়।
তিনি আরও জানান, বর্ষায় গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময়। আলো বাতাস ও পর্যাপ্ত রোদের তাপ থাকে এমন জায়গাতে গাছ রোপন করতে হবে। এতে ফলের স্বাদ গাঢ় মিষ্টি হবে। এছাড়াও, গাছের গোড়ায় পর্যাপ্ত পরিমাণে জৈব সার দিয়ে গাছ রোপণ করতে হবে। সেইসাথে নিয়মিতভাবে গাছের যত্ন নিতে হবে। শীতকালে গাছের ডালে নতুন পাতা ও কুশি বের হবে, আর তাতেই ফুল ধরবে এবং পরিণত বয়সে তা আঙ্গুরে রুপান্তিত হবে। এসময় গাছের পাতায় মাকড়নাশক ছিঁটাতে হয়। কারণ, একজাতীয় পোকা এই গাছের পাতা ও ফল খেয়ে ফেলে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, সামিমের আঙ্গুর বাগান পরিদর্শন করেছি। তিনি আঙ্গুর চাষ করে ভাল ফলনও পেয়েছেন। এই উপজেলায় মূলত শখের বসেই আঙ্গুর চাষ হচ্ছে। তবে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আঙ্গুর চাষে বিভিন্ন ধরণের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেয়া হবে বলেও জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।
নেক্সটনিউজ/জেআলম