আপডেট: আগস্ট ২, ২০২০
নেক্সটনিউজ প্রতিবেদক,ঢাকা : মেজর সিনহা হত্যার ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ।তোলপাড় শুরু হয়েছে পুলিশের উপর মহলে। ব্যাপক আলোচনার ঝড় বইছে সারাদেশে।
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ হত্যার ঘটনার বিষয়ে অবহিত হতে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুকও কক্সবাজার এসে পৌঁছেছেন। তিনি চট্টগ্রাম থেকে রবিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার পৌঁছেন। এর আগে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) মো. জাকির হোসেন এ বিষয়টি নিয়ে কক্সবাজার আসেন।
ইতিমধ্যে গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বরত পুলিশ পরিদর্শক (আইসি) লিয়াকত আলীর গুলিতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় পুলিশ কেন্দ্রটির সব সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রবিবার সকালে তাদেরকে ক্লোজড করে কক্সবাজার পুলিশ লাইনে নিয়ে আসা হয়। সেই সঙ্গে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রে কক্সবাজার জেলা পুলিশ থেকে নতুন পুলিশ সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে (৩১ আগস্ট) কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ রোডে কক্সবাজারমুখী সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদের প্রাইভেট কারটি টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে পৌঁছালে গাড়িটি তল্লাশি করা নিয়ে তর্ক হয়।
এসময় মেজর সিনহা ওপর দিকে তার হাত তোলা অবস্থায় তাঁকে তদন্ত কেন্দ্রর ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী গুলি করে হত্যা করে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও সেনা সদর থেকে গণমাধ্যমে প্রেরিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়। তবে কক্সবাজার পুলিশের দাবি গাড়ি থেকে নামার সময় মেজর সিনহা পিস্তল তাক করায় আত্মরক্ষার্থে তাঁকে গুলি করা হয়।
খুন হওয়া অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ যশোরের বীর হেমায়েত সড়কের সরকারের সাবেক উপসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ খানের সন্তান। অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ ৫১তম বিএমএ লং কোর্সের একজন কর্মকর্তা হিসাবে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় নিয়োজিত বাংলাদেশের এলিট ফোর্স এসএসফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) এ একজন বাচাইকৃত চৌকস সেনা অফিসার হিসাবেও কর্মরত ছিলেন। ২০১৮ সালে মেজর পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় সিনহা মো. রাশেদ সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন।
ঢাকাস্থ স্টামফোর্ট ইউনিভার্সিটির ফ্লিম এন্ড মিডিয়া বিভাগ থেকে জাস্ট গো নামক একটি কম্পানির ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়ার প্রামাণ্য তথ্য চিত্র নির্মাণের জন্য গত ৩ জুলাই থেকে তিনিসহ আরো ৪ জন কক্সবাজারে অবস্থান করছিলেন। গত ৫ জুলাই তারা কক্সবাজার পৌরসভার মাধ্যমে কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ হতে করোনার নমুনা টেস্ট করান। টেস্টে তাদের রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ আসে। এ ঘটনা তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাজাহান আলিকে প্রধান ও কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং রামু সেনানিবাসের ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও কক্সবাজারের এরিয়া কমান্ডারের একজন প্রতিনিধিকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে বিস্তারিত তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটি খুবই সতর্কতার সাথে এগুচ্ছে বলে একটি নির্ভরশীল সূত্রে জানা গেছে।