সাইফুল ইসলাম, কুষ্টিয়া থেকে : নাম তানিয়া। বয়স মাত্র ১৩/১৪ হবে। ঠাকুরগাঁও জেলা সদরে এক জরাজীর্ণ বস্তিতে তার বসবাস। ৮ বোন ও পিতা-মাতা নিয়ে তাদের ১০ জনের সংসার। সে জানায়, দিনে ১ বেলাও খাবার জোটে না ভালোভাবে। কিন্তু তার পিতা মানিক সরদার একজন কুখ্যাত ডাকাত। পুলিশের চোখে ব্ল্যাকলিস্টেড। তাতে কি? এইটুকু মেয়ে মেনে নেয়নি পিতার অবৈধ পেশাকে।
ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে অত্যন্ত ধূর্ত প্রকৃতির সে। তখন তানিয়া পরিকল্পনা নেয় পিতাকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেয়ার। সাহস নিয়ে চলে যায় স্থানীয় থানায়। কথা বলে সে থানার একজন এসআই এর সঙ্গে। সেই পুলিশ অফিসারের পরামর্শ মোতাবেক সময়োপযোগী তথ্য দিয়ে তানিয়া তার পিতাকে কয়েকদিনের মধ্যে গ্রেফতার করাতে সক্ষম হয়। জেলে যায় মানিক ডাকাত।
বেশকিছু দিন অতিবাহিত হয়ে যায়। এর মধ্যে তানিয়াকে বিভিন্ন মাধ্যমে শুনতে হয় তার পিতা জেল থেকে ছাড়া পেলেই তাকে প্রাণে মেরে ফেলবে। হয়তো তার পিতা বুঝতে পেরেছে তার মেয়েই তাকে ধরিয়ে দিয়েছে। হঠাৎ পিতার জেল থেকে জামিনের কথা শুনে বাস ও ট্রেনযোগে অজানা উদ্দেশ্য বেড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে এসে পৌঁছে ভেড়ামারায়। লোকমুখে থানার কথা জিজ্ঞেস করে চলে আসে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ভেড়ামারা থানায়। সে বলতে থাকে ওসি আংকেলের সাথে কথা বলবো। তানিয়া বিস্তারিত ঘটনা জানায়, ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শাহজালালকে।
ওসির নির্দেশে ভেড়ামারা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই প্রকাশ রায় ঠাকুরগাঁও সংশ্লিষ্ট থানায় কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হন। জানতে পারেন তানিয়ার পিতা এখনও জেল থেকে জামিন না পাওয়ার। ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ এর যথাযথ পদক্ষেপের মাধ্যমে তার পরিবার ও উক্ত থানায় কথা বলে তখনই তানিয়ার বাড়ি যাওয়ার সুব্যবস্থা করেন। সেইসাথে সেখানকার থানাকেও অনুরোধ করেন তানিয়ার নিরাপত্ত্বার বিষয়টি দেখার জন্য। আজ সকালে নিরাপদে তানিয়া বাড়ি পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন, তার নানা তালাশ হোসেন। অভিনন্দন ওসি ভেড়ামারা, বেড়ে উঠুক প্রতিটি ঘরে তানিয়ার মতো মেয়ে।