আজিজুল হক, নাগরপুর (টাঙ্গাইল) থেকে : করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো যখন হিমশিম খাচ্ছে ঠিক তখনই আমরা বাংলাদেশীরা কোন প্রতিষেধক নিয়ে বসে আছি যে করোনা আমাদের কিছুই করতে পারবে না। টাঙ্গাইল জেলা তথা দেশের আনাচে-কানাচে প্রত্যেকটি দোকানে মানুষে মানুষে সয়লাব।নাগরপুরও এর ব্যতিক্রম নয়।
সরকারের পক্ষ হতে প্রশাসন দিনরাত মানুষ হটানোর কাজটি করে যাচ্ছে। কিন্তু কোন ভাবেই রুখতে পারছেনা মানুষের ঢল। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সকলেই আসন্ন ঈদ উপলক্ষে কেনাকাটায় ব্যস্ত। নেই কোন নিরাপত্তার বালাই। প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিলে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন নাম। তবু হুশ নেই। বাজার সরগরম করে কিনছে জুতা-জামা, ফ্রিজ, ইলেকট্রনিকস, ইলেকট্রিক সামগ্রী। যে সব পণ্য ছয় মাস পরে কিনলেও কোন সমস্যা নেই। অথচ আজকেই এসব কিনতে হবে।
এ বিষয়ে নাগরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, আমরা সরকারী নির্দেশনা মেনে চলার জন্য জনগণকে অনুরোধ করেছি। বাংলাদেশ পুলিশ ও জেলা পুলিশের পক্ষ হতে লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন, সাধারণ জনগনকে ঘরে ফেরাতে সরকারের পক্ষ হতে প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার ও স্বাভাবিক ত্রাণ বিভিন্ন পেশার মানুষের হাতে হাতে পৌঁছে দিয়ে তাদের ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে কিন্তু সাধারণ মানুষ ঘরে থাকছে না। উপজেলায় সরকারী ও বেসরকারী উদ্যেগে প্রায় ৩০ হাজার পরিবারের খাবার নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রশাসন দিনরাত সাধারণ মানুষকে ঘরে রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের কেনাকাটা করার প্রবনতা বা ইচ্ছে শক্তি আমরা কোন ভাবেই দমন করতে পারছি না।
করোনা ভাইরাসে সংক্রামিত হয়ে অনেক মানুষ মারা যেতে পারে- এর দায়ভার কার?
এমন প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সাংসদ অালহাজ্ব আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন – সাধারণ মানুষকে ঘরমুখো করার আপ্রাণ চেষ্টা চলছে। কিন্তু তারা সকল বাঁধা, অনুরোধ উপেক্ষা করে বাজরে ভীর করছে। এর দায়ভার তাদেরই।
কেউ কারো দায়িত্ব নিতে পারে না। আমরা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে একযোগে মৃত্যুর মিছিল ঠেকাতে কাজ করে যাচ্ছি। সাধারণ জনগন যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন আমি এ অনুরোধ জানাই। সকলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন, সুস্থ থাকুন। করোনায় যেন কোন প্রাণ অকালেই ঝরে না যায়।
তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে নগদ ২ হাজার ৫ শত টাকা করে উপহার পাঠিয়েছেন। সরকারী- বেসরকারি ভাবে শুধু নাগরপুর উপজেলাতেই প্রায় ৩০ হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করে সাধারণ জনগনকে ঘরে থাকার অনুরোধ করা হয়েছে। তবুও তারা ঘর ছেড়ে বাইরে এসে ঈদের কেনাকাটা করে বাড়ি ফিরছে। তারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলছে না। কাজেই এরা করোনায় আক্রান্ত হলে এর দায়ভার তাদেরই নিতে হবে। কেউ কারো জন্য দায়ী নয়।