কিন্তু প্রানঘাতি করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ এর কারনে লকডাউনে রয়েছে টাঙ্গাইল জেলা।টাঙ্গাইল জেলা দেশের প্রথম লকডাউন ঘোষিত জেলা হওয়ায় দীর্ঘদিন যাবৎ রিক্সা চালানো বন্ধ রয়েছে মনির হোসেনের।ছাত্ররা বাড়ি চলে যাওয়ায় ম্যাচও বন্ধ। তাই বিপ্লবের মা বকুল বেগমও কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।বিপ্লবের ছোট ভাই মো. কাওসারও করোনার কারনে ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলে বাবা-মায়ের কাছে চলে এসেছে। এমতাবস্থায় কর্মহীন হয়ে পড়া পরিবারটি মানবেতর জীবন-যাপন করছে।
২৪ এপ্রিল নেক্সটনিউজ এর সম্পাদকের সাথে কথা হয় প্রতিবন্ধী বিপ্লব ও তার ভাই মো.কাওসার হোসেনের সাথে। কাওসার হোসেন তার বড় ভাই প্রতিবন্ধী বিপ্লবকে নিয়ে টাঙ্গাইল শহরের বেবীস্ট্যান্ডের সারগুদামে এসেছিলো ত্রান নেয়ার জন্য। ক্লীন টাঙ্গাইল নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী স্থানীয় সংগঠন এই ত্রান কার্যক্রমের আয়োজন করে।কাওসার ত্রান নিয়ে হুইল চেয়ারে করে তার ভাইকে বাসায় নিয়ে যাচ্ছিলো। নেক্সটনিউজের কাছে কাওসার হোসেন তার পরিবারের দুঃখের কথা জানায়।প্রতিবন্ধী বিপ্লব স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারে না। হাঁটতেও পারেনা।হুইল চেয়ারে চলাচল করে সে।আদো আদো কথা বলতে পারে ।তোমাকে কে ত্রান দিছে- জিজ্ঞেস করলে বিপ্লব হাসিমাখা মুখে বলে, ” মিরন কাক্কু,মিরন কাক্কু দিছে। ” আলহাজ্ব জামিলুর রহমান মিরন টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র।সেই মেয়রের হাত থেকেই ত্রান নিয়েছে বিপ্লব। ত্রান পেয়ে সে মহাখুশি। বিপ্লবকে নিয়ে আসা তার ভাই কাওসার হোসেন নেক্সটনিউজকে জানায়, মেয়র মিরন কাক্কুর হাত থেকে ত্রান পেয়ে খুব খুশি হয়েছি।আমাদের তো আর দেখার কেউ নেই। কাওসার হোসেন এক পর্যায়ে বলে, ” স্যার, মেয়র কাক্কুকে বইলেন।আমগো জানি আরেকটু সাহায্য করে।” প্রতিবন্ধী বিপ্লবের ছোট ভাই কাওসারের পড়াশোনা করার খুব ইচ্ছে। কিন্তু পরিবারের অবস্থা চিন্তা করে তাকে এই ছোট বয়সে চাকরির পথ বেছে নিতে হয়েছে। পাঁচ বছর বয়সের আলামীনকেও স্কুলে ভর্তি করানো দরকার।কিন্ত অর্থনৈতিক অভাব থাকায় তাকে পড়াশোনা করাতে পারছে না। সে জানায়, তার বড় ভাই প্রতিবন্ধী হলেও তার প্রতি পরম ভালোবাসা রয়েছে আমাদের পরিবারের সকলের ।অভাবের কারনে বড় ভাইকে চিকিৎসা করাতে না পারায় কষ্ট হয় । কাওসার জানায়, অভাবের তাড়নায় বাবা রিক্সা নিয়ে একদিন বেরুলে পুলিশ বাবাকে পিটিয়ে আহত করেছে।তাই আর বেরোয় না।একদিকে পুলিশের ভয় আরেক দিকে পেটের ক্ষুধা।কোনদিকে যাবো আমরা — প্রশ্ন কাওসারের। সাত সদস্যের এই পরিবারটির জন্য বিত্তশালী, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহবান জানিয়েছেন স্থানীয়রা। অপরদিকে জনদরদী টাঙ্গাইলের পৌর মেয়র আলহাজ্ব জামিলুর রহমান মিরনকে এই পরিবারটির দিকে বিশেষ সুদৃষ্টি দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।