আপডেট: আগস্ট ১৯, ২০১৯
নেক্সট নিউজ প্রতিবেদকঃ দীর্ঘ সাতবছর পর, পরিবারকে ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বসিত ১৯ বছর বয়সী খাদিজা খাতুন।
২০১২ সালে এক প্রতিবেশী ভারতে পাচার করে দেয় তাকে
২০১২ সালে এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে ভারতে পাচার হয়েছিলেন খাদিজা খাতুন (১৯)। এরপর দীর্ঘ ৬ বছর ভারতের মালদহে সরকারি এক সেফহোমে থাকতে হয়েছে তাকে।
শনিবার (১৭ আগস্ট) এসিডি’র মাধ্যমেই মা-বাবাকে ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
গতবছরের ১৯ এপ্রিল কোনো এক মাধ্যমে চাঁপাইনাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ফিরে এসে রাজশাহীর মানবাধিকার সংস্থা এ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্টের (এসিডি) শেল্টার হোমে আশ্রয় নিয়েছিল সে। সেই থেকে খাদিজা দীর্ঘ একবছর ৪ মাস এসিডি’র শেল্টার হোমে লালন-পালন হচ্ছিলো।
এসময় খাদিজা বলেন, দীর্ঘ ৭ বছর পর মায়ের মায়াভরা মুখ দেখতে পেয়ে মনে হচ্ছে আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছি! কোনো দিন ভাবতেও পারিনি বাবা-মাকে ফিরে পাবো! পরিবারকে ফিরে পেয়ে এতো খুশি হয়েছি যা কাউকেই বুঝাতে পারবো না।
খাদিজার বাবার নাম আবুল কাশেম ফকির আর মা আনোয়ারা বেগম। এসিডি’র অফিসে এসে মা আনোয়ারা বেগম জানান, তাদের বাড়ি ময়মনসিংহ।
তবে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার গুলশান-২ এর নূরের চালা এলাকায় পরিবারকে নিয়ে বাস করছিলেন আনোয়ারা। এখনো সেখানেই বসবাস করছেন তারা। ২০১২ সালে খাদিজা যখন নিখোঁজ হন তার আগে সে মাদ্রাসায় পড়ছিলো। পড়ালেখার পাশাপাশি পাশের বাসার ধনাঢ্য এক ব্যক্তির সন্তানকে দেখাশোনার কাজও করতো খাদিজা। একদিন ওই বাড়িতে যাওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ হন খাদিজা।
আনোয়ারা বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে এসিডি’র মাধ্যমে হঠাৎ মেয়ের খোঁজ পাই। তখন থেকেই মেয়ের সাথে মোবাইলে কথা কই। বুঝতে পারি এই সেই আমার খাদিজা। অবশেষে গুলশান থেকে মেয়েকে নিতে রাজশাহীর উদ্দেশে রওয়ানা হই। শনিবার সকালে এসিডি অফিসে মেয়েকে পেয়ে খুব ভালো লেগেছে। মেয়েকে পেয়ে মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছি।
এসিডি’র শেল্টার হোম ম্যানেজার পুষ্প রাণী বিশ্বাস বলেন, ২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থানার মাধ্যমে আমাদের শেল্টারহোমে আসে খাদিজা। তারপর থেকে সে শেল্টার হোমেই লালন-পালন হচ্ছিলো। এখানে আশার পর থেকেই খাদিজা পরিবারের কাছে ফিরে যেতে চেয়েছিলো। আমরা তার পরিবারের খোঁজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত আমরা পরিবারের খোঁজ পেয়ে আনুষ্ঠানিকতা শেষে শনিবার দুপুরে খাদিজাকে মা-বাবার কাছে হস্তান্তর করেছি।