নিয়ম না মানাসহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে রাজধানীর তিন হাসপাতালকে সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিদপ্তর ও র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি বেশি নেয়ায় পপুলার হাসপাতাল ধানমণ্ডি শাখাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সোমবার, ভোক্তা অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত পপুলার হাসপাতালে এই অভিযান চালায়। একই অভিযোগে রাজধানীর স্কয়ার, ল্যাবএইড ও ইবনে সিনা হাসপাতালেও অভিযান চালায় ভোক্তা অধিদপ্তর।
যদিও, স্কয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা অস্বীকার করেছে। স্কয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অফিসে ডেকে আংশিক শুনানি করা হয়। তাদের পরবর্তী শুনানি মঙ্গলবার সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। একইসঙ্গে, ল্যাবএইড ও ইবনে সিনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও শুনানিতে ডাকা হয়েছে।
এ বিষয়ে, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, ‘আমরা একটি বার্তা দিতে চেয়েছি যে, এই ক্রান্তিকালীন সময়ে সরকার ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি’র জন্য একটি মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। আপনার এটা মেনে চলুন। আর না মানলে ভোক্তা অধিদপ্তর থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ সময়, তিনি জনগণের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘যেখানেই এই ধরণের অরাজকতা ও অনিয়ম হবে সেখানকার অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বা আমাদের অফিসে এসে জানান। আমরা আপনাদের পাশে আছি।’
এদিকে, রক্তের নমুনা নিয়ে ল্যাবে পরীক্ষা না করে মনগড়া রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগে উত্তরার ক্রিসেন্ট ও লুবনা জেনারেল হাসপাতালকে ৩৭ লাখ টাকা জরিমানা করেছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সোমবার, ডেঙ্গু পরীক্ষার নির্ধারিত ফি ৫০০ টাকা নেয়া হচ্ছে কি না তা তদারকি করতে উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে আসে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ডেঙ্গুর নির্ধারিত ফি নেয়া হলেও হাসপাতালের ল্যাবে গিয়ে মেলে অন্য চিত্র।
র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত ল্যাবে গিয়ে দেখতে পায় বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রোগীদের কাছ থেকে সংগৃহীত নমুনা কোনো প্রকার পরীক্ষা না করেই তৈরি করা হয়েছে অসংখ্য রিপোর্ট। এমনকি, কোনো কোনো পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করার পর রিপোর্ট দিতে ৭২ ঘন্টা বা ৪৮ ঘন্টা সময় লাগে। সেখানে তারা নমুনা সংগ্রহ করার ১২ ঘন্টা পরই রোগীদের রিপোর্ট সরবরাহ করে আসছিল হাসপাতালটি।
পরে, হাসপাতালটিকে ১৭ লাখ টাকা জরিমানা করে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই অভিযোগে উত্তরার লুবনা জেনারেল হাসপাতালকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বৃদ্ধি এবং এর চিকিৎসায় বেশ কয়েকটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক অর্থ নেয়ার অভিযোগ ওঠে। এর পরই ডেঙ্গু রোগের টেস্টের মূল্য ৫০০ টাকা নির্ধারণ করে দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।