২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার

 

মাটি খুঁড়ে মিলল অনন্ত জলিলের ২০ লাখ টাকা

আপডেট: জুলাই ১৮, ২০১৯

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চিত্রনায়ক অনন্ত জলিলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এ জে আই গ্রুপের ৫৭ লাখ টাকা চুরির ঘটনায় জড়িত গাড়িচালকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা জেলার গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। প্রধান আসামির বাসার সামনের উঠান খুঁড়ে ২০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ বুধবার ঢাকার আদালতে ওই তিন আসামি টাকা চুরি করার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।

টাকা খুঁজতে ভোলায় মাটি খোড়া হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীতটাকা খুঁজতে ভোলায় মাটি খোড়া হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

আসামিরা হলেন গাড়িচালক শহীদ বিশ্বাস (৩৭), তাঁর স্ত্রী আরজু বেগম (২৬) ও শহীদের ভাগনে জুয়েল (২১)।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা জেলা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল আলম শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, অনন্ত জলিলের ৫৭ লাখ টাকা চুরির কথা স্বীকার করেছেন প্রধান আসামি গাড়িচালক শহীদ বিশ্বাসসহ তিনজন।
অনন্ত জলিলের এ জে আই গ্রুপের ৫৭ লাখ টাকা চুরির ঘটনায় গত ৭ এপ্রিল সাভার মডেল থানায় মামলা হয়। মামলায় গাড়িচালক শহীদ বিশ্বাস ও হিসাবরক্ষণ বিভাগের নির্বাহী জহিরুল ইসলামের নাম উল্লেখ করা হয়।চিত্রনায়ক অনন্ত জলিলের টাকার খোঁজ মিলেছে। ছবি: সংগৃহীতচিত্রনায়ক অনন্ত জলিলের টাকার খোঁজ মিলেছে। ছবি: সংগৃহীত
মাটির নিচে অনন্তের টাকা
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা ডিবির এসআই আশরাফুল আলম বলেন, ঢাকার সাভার থেকে অনন্ত জলিলের টাকা চুরি করে নিয়ে গাড়িচালক শহীদ প্রথমে যান ভোলায় নিজ গ্রামের বাড়িতে। পরে সেখান থেকে চলে যান যশোরে। সেখান থেকে শহীদ স্ত্রীকে মোবাইলে জানান, চুরি করার টাকা তাঁদের বাড়ির পাশে থাকা শিয়ালের গর্তে রেখে এসেছেন। স্ত্রীকে ওই টাকা ঘরে আনতে বলেন। পরে শহীদ ভোলায় আসেন। চুরি করা টাকার মধ্যে ২০ লাখ টাকা পলিথিনে মুড়িয়ে বাড়ির উঠানে পুঁতে রাখেন। শহীদকে গ্রেপ্তার করার পর তাঁর কথামতো সেই টাকা মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয়। সাড়ে ৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয় শহীদের স্ত্রী আরজুর কাছ থেকে।

টাকা চুরি নিয়ে শহীদ আদালতকে বলেন, চিত্রনায়ক অনন্ত জলিলের কোম্পানির চালক হিসেবে কাজ করতেন। তাঁর কাছে অনেক লোকে টাকা পেত। কোম্পানির কর্মকর্তা জহির তাঁর গাড়িতে করে একদিন ব্যাংকে রওনা হন। জহির গাড়িতে টাকা রেখে যান। তখন ওই টাকা দেখে লোভ হয়। ওই টাকার ব্যাগ নিয়ে তিনি চলে যান। ব্যাগে ছিল ৫৫ লাখ টাকা।

চুরি হওয়া ৫৭ লাখ টাকা মধ্য মাটির নিচে মিলল ২০ লাখ টাকা। ছবি: সংগৃহীত

চুরি হওয়া ৫৭ লাখ টাকা মধ্য মাটির নিচে মিলল ২০ লাখ টাকা। ছবি: সংগৃহীত

 

শহীদের স্ত্রী আরজু বেগম আদালতকে বলেন, তাঁর স্বামী অনন্ত জলিলের কোম্পানি থেকে ৫৫ লাখ টাকা চুরি করে বাড়ি আসে। ওই টাকার কিছু অংশ তিনি তাঁর ব্যাংক হিসাবে রাখেন। বাকি টাকা বাড়ির উঠানে মাটি খুঁড়ে পুঁতে রাখেন।

মামলার বাদী জাহিদুল হাসান জানান, সাভারের হেমায়েতপুরে অবস্থিত পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল। তাঁর প্রথম স্ত্রী, এ জে আই গ্রুপের পরিচালক জাহানারা বেগমের আদাবরের বাসা থেকে জহিরুল ইসলাম ও শহীদ বিশ্বাস গ্যাস বিল পরিশোধ করার জন্য ৫৭ লাখ টাকা নেন। টাকাগুলো ব্যাংকে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তা না করে পালিয়ে যান।
টাকা চুরি হওয়ার পর চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল গাড়িচালককে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেন।

আসামি গাড়িচালক শহীদের সঙ্গে চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল। ছবি: সংগৃহীতফেসবুকে অনন্ত লেখেন, ‘আমার ভক্তদের কাছে আমি একটি সাহায্য চাচ্ছি। আপনারা সবাই জানেন, ১৯৯৬ সাল থেকে সাভারের হেমায়েতপুরে অবস্থিত এ জে আই গ্রুপ সুনামের সঙ্গে পরিচালিত হয়ে আসছে। আমার কারখানার এক গাড়িচালক ৫৭ লাখ টাকা গ্যাস বিল না দিয়ে পালিয়েছে। এরই মধ্যে থানায় মামলা করা হয়েছে। যে এই প্রতারককে ধরিয়ে দিতে পারবেন, তাঁকে আমি নিজ হাতে পুরস্কৃত করব।

তদন্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, চুরি হওয়া ৫৭ লাখ টাকার মধ্যে সাড়ে ২৭ লাখ টাকা উদ্ধার হয়েছে। আসামি শহীদ তাঁদের জানিয়েছেন, আট লাখ টাকা তিনি শ্বশুরকে দেন। দুই ভাগনেকে দেন আট লাখ টাকা। বাকি টাকা দিয়ে শহীদ বাড়ির কাজ করেছেন।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
Website Design and Developed By Engineer BD Network