আপডেট: জুন ২১, ২০২০
অমর চাঁদ গুপ্ত অপু, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) থেকে : দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে রবিবার সকালে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা বীর মুুক্তিযোদ্ধা রমনী চন্দ্র রায়ের (৭০) আম গাছের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রমনী চন্দ্র রায় উপজেলার আলাদিপুর ইউনিয়নের গোকুল গ্রামের মৃত মতিলাল রায়ের ছেলে অবসরপ্রাপ্ত সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ছিলেন।
প্রতিবেশিরা জানান, রবিবার সকালে গ্রামের লোকজন নিজ নিজ কাজে গ্রামের পশ্চিম পার্শ্বের জমিতে কাজ করতে গেলে ওই এলাকার একটি আম গাছের সাথে বীর মুক্তিযোদ্ধা রমনী চন্দ্র রায়ের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। পরে বিষয়টি থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, চাকরি থেকে অবসরগ্রহণের পর থেকেই আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছিলেন রমনী চন্দ্র রায়। আর্থিক সংকট মেটানোর জন্য কয়েকটি এনজিওসহ ব্যক্তি বিশেষের কাছে ঋণদেনা করেছিলেন। ওইসব ঋণের দেনা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন। ধারনা করা হচ্ছে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারার কারণেই তিনি গত শনিবার রাতের কোন এক সময়ে বাড়ীর লোকজনের অলক্ষ্যে আম গাছের সাথে গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার করেছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা রমনী চন্দ্র রায়ের স্ত্রী ছবি রানী রায় বলেন, চাকরি থেকে অবসরের পর বেকার হয়ে পড়েছিলেন রমনী চন্দ্র রায়। বাড়ীতে তেমন কারো সাথে কোন ঝগড়া বিবাদ ছিল না। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বাড়ীতে তারা বসবাস করেন। শনিবার রাতে এক সাথে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। কিন্তু কখন তিনি ঘর থেকে বের হয়ে গেছেন তিনি তা বলতে পারেন না। তার কোন ঋণ দেনা ছিল না, যা কিছু ঋণ দেনা রয়েছে তার সবটাই আমার (ছবি রানী রায়ের) নামের রয়েছে। তারপরও তিনি কেন আত্মহত্যার পথ বেঁছে নিয়েছেন তা ভগবান ছাড়া কেউ বলতে পারবে না।
থানার পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) মো. মাহামুদুল হাসান বলেন, মরদেহের সুরতহাল দেখে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে এটি আত্মহত্যা। তবে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে কারো বিরুদ্ধে কিংবা মৃত্যু নিয়ে কোন সন্দেহ-সংশয় না থাকায় সৎকার্য করার জন্য মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম চৌধুরী বলেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার এছার উদ্দিনের কাছে বিষয়টি শুনেচেন। গতকাল রবিবার দুপুর দুইটায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা রমনী চন্দ্র রায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়েছে।