৩০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার

 

যৌতুকের টাকার জন্য শারমিনকে হত্যা করে স্মামী-শ্বশুড়, সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার

আপডেট: জুন ১২, ২০২০

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

মোঃ নাঈম শাহ্, নীলফামারী থেকে : নীলফামারী সদর উপজেলার হাবিবা আকতার শারমিন হত্যাকান্ডে শারমিনকে যৌতুকের চল্লিশ হাজার টাকার জন্য হত্যা করে স্বামী ও শ্বশুড় সংবাদ সম্মেলনে জানালেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বিপিএম পিপিএম।

শুক্রবার (১২ই জুন) জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয় নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানায়, গত ৯ই জুন জানা যায় আধুনিক সদর হাসপাতালে বিষপানজনিত কারনে এক নারীর মরদেহ রয়েছে। বিষপানে মৃত্যুর কোনো লক্ষন ছিল না হাবিবা আকতার শারমিনের শরীরে। বিষয়টির রহস্যজনক মনে হওয়ায় রহস্য উদঘাটনের জন্য পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বিপিএম পিপিএম এর সার্বিক তদারকি ও নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নীলফামারী সার্কেল) রুহুল আমীন, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোমিনুল ইসলামের নির্দেশনায় নীলফামারী থানার একাধিক টিম রহস্য উদঘটনের কাজ শুরু করে ।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আরো জানায়, দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার কুষ্ণপুর গ্রামের হাবিল শেখের মেয়ে হাবিবা আকতার শারমিনের সাথে এক বছর আগে ১লাখ ২০হাজার টাকায় যৌতুকে বিনিময়ে প্রস্তাবের মাধ্যমে বিয়ে হয় সদর উপজেলার খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের সাবুল্লিপড়া গ্রামের লাল মামুদ এর ছেলে মমিনুরের সাথে। তাদের বিয়ের সময় ৮০ হাজার টাকা যৌতুক পরিশোধ করা হলেও যৌতুকের বাকি ৪০ হাজার টাকার জন্য সব সময় তাদের ঝগড়া লেগেই থাকতো এমনকি স্মামী-শ্বশুড় মিলে নির্যাতন চালাতো শারমিনের উপর। গত ৯জুন সকালের দিকে শারমিনকে শ্বশুড় লাল মামুদ পা চেপে ধরে এবং মমিনুর খাটের রোলার দিয়ে আঘাত করে। এক পর্যায়ে তাকে গলা চিপে ধরে বড় স্টিলের মগ দিয়ে মাথায় আঘাত করতে থাকে। গুরুত্বর অবস্থায় তাকে নীলফামারী সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে সেখান তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। এ্যাম্বুলেন্সে রংপুরে যাওয়ার পথে উত্তরা ইপিজেড এলাকায় মারা যায় শারমিন। বিষয়টি বুঝতে পেরে এ্যাম্বুলেন্স থেকে পালিয়ে যায় মমিনুর। তিনি আরো জানান, ঘটনার ১৮ঘন্টার মধ্যেই অভিযান চালিয়ে স্বামী ও শ্বশুড়কে গ্রেফতার করা হয় এবং বৃহস্পতিবার বিকেলে নীলফামারী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শারমিনের স্বামী ও শ্বশুড়কে নেওয়া হলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক জাহিদ হাসানের কাছে ১৬৪ধারায় জবানবন্দি দেন তারা। পরে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত।

একই সময় গত ২৪ঘন্টায় সদরের টুপামারিতে ২৯পিচ ইয়াবাসহ শফিকুল ইসলাম নামে এক মাদক ব্যবসায়ী, সৈয়দপুরে লুৎফর রহমান নামে এক ভুয়া ওসিকে গ্রেফতার ও কিশোরগঞ্জে পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টাকারি মহির উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানায় মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বিপিএম পিপিএম। এছাড়া গত একমাসে তিনটি রহস্যজনক হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘটন করে নয়জন আসামীকে গ্রেফতার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়ে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সুপার বলেন, দুষ্টের দমন- শিষ্ঠের পালন করতে জেলা পুলিশ সদয় প্রস্তুত রয়েছে। অন্যায় করলে কাউকে ছাড়া দেওয়া হবে না এই কথাটা আমরা প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার মাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে দিতে চাই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) অশোক কুমার পাল, সহকারি পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোমিনুল ইসলাম, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মাহমুদ উন নবী সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাকিবৃন্দ।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
Website Design and Developed By Engineer BD Network