সাইফুল ইসলাম, ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) থেকে : অতিবৃষ্টির কারণ কুষ্টিয়ার জগতি সুগার মিলের আওতায় ভেড়ামারা উপজেলার প্রায় ১হাজার একর জমির আখ ক্ষতিগ্রস্থ ডুবে গেছে । অতি বৃষ্টিতে আখের জমিতে জলাবদ্ধতার পাশাপাশি শুকিয়ে যাচ্ছে আখ। এতে করে আখ নষ্ট হওয়ার একদিকে আখচাষীদের মাথায় হাত অন্যদিকে আগামী মৌসুমে আখ সংকট দেখাতে পারে মিলটিতে ।
কুষ্টিয়া সুগার মিলের ভেড়ামারা সাবজোন প্রধান তোজাম্মেল হোসেন জানান, ২০১৯-২০২০ মৌসুমে ভেড়ামারা সাবজেোনের আওতায় মোট ২৪হাজার ৯৯ একর জমিতে ঈশরদী-৩৩,৩৯ ও বিএসআরআই-৪৫ জাতের আখের আবাদ করা হয়। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৭হাজার মেট্রিকটন। এরমধ্যে অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ৬৮১ একর জমির আখ ডুবে গেছে। ৯০ একর জমির আখ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে। কুষ্টিয়া সুগার মিল সূত্র জানায়, মাড়াই মৌসুম দীর্ঘায়িত হওয়ার কারণে মুড়ি আখের আবাদও বিলম্বিত হয়। আবার অনেকেই দেরিতে আখ রোপন করেন। যার কারণে মে মাস থেকে শুরু হওয়া অতিবৃষ্টিতে মিল জোনের অনেক জমির আখ পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃষ্টি অব্যহত থাকা এবং এলাকার নদীগুলোতে বাঁধ ও দখলের কারণে ক্ষেতের পানি বের হতে পারছে না। ফলে একের পর এক জমি জলমগ্ন হয়ে পড়ছে। সরেজমিনে সাবজোনের ক্ষেমিরদিয়ার, দামুকদিয়া-১ ও ২, ভেড়ামারা, বাগগাড়িপাড়া, রায়টাসহ বিভিন্ন কেন্দ্রের মাঠ ঘুরে একই চিত্র দেখা যায়।
ক্ষেমির দিয়ার গ্রামের আখ চাষি সিরাজ উদ্দিন জানান, মওলার বিলে তিনি ২১ বিঘা জমিতে আখ লাগিয়েছিলেন। তার মধ্যে ১৫ বিঘা ডুবে গেছে। এই গ্রামের আরেক চাষি মাসুদ জানান, জলাবদ্ধতার কারণে তাঁর ৪ বিঘা জমির আখ ডুবে তার এলাকার মাঠের অধিকাংশ আখ ক্ষেতই এখন পানির নিচে। যে সব আখ গাছের মাজ (মাথা) পর্যন্ত পানি উঠেছে তার সবই মরে যাচ্ছে।’ কৃষকদের অধিকাংশ সুগার মিল থেকে সার বীজ র্্ণিনিে্আ রোপন করেছেন। এমতাবস্থায় সহায়তা না পেলে তাদের পথে বসতে হবে হতাসা ব্যক্ত করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ প্রান্তিক কৃষকরা। তাই সরকারি ভর্তুকি দাবি করেছেন তারা।
ভেড়ামারা সাবজোন প্রধান তোজাম্মেল হোসেন আরো বলেন, গত বছর আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ২৮ হাজার একর থাকলেও ৩০হাজার ৬৭১ একর জমিতে আখ চাষ হয়েছিল। স্থানীয় আখ উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা হলো জলাবদ্ধতা। মিল জোনের বিভিন্ন খাল পুণ:খনন ও সংস্কারের মাধ্যমে জলাবদ্ধতার হাত থেকে আখক্ষেত রক্ষা করতে পারলে একর প্রতি ফলন বৃদ্ধি পাবে। এতে চাষিরাও লাভবান হবেন। বর্তমান অবস্থার নিরসন না হলে মাড়াই মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না বলে মনে হচ্ছে।