২৯শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার

 

যৌতুকের জন্য স্ত্রী নির্যাতন, শিক্ষক স্বামী কারাগারে

আপডেট: জুলাই ১২, ২০২০

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

আমিনুল জুয়েল, নওগাঁ থেকে : নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলায় ১০ লাখ টাকা যৌতুক না পাওয়ায় শারমিন আক্তার নামের এক গৃহবধূকে নির্যাতনের পর শ্বশুড়বাড়ি থেকে তাঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ থানায় যৌতুক ও নারী নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছেন । পরে পুলিশ ওই গৃহবধূর শিক্ষক স্বামী আবদুল মমিনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।

এ ঘটনায় মামলা তুলে নিতে ওই গৃহবধূকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে শ্বশুড়বাড়ির লোকজন। এজন্য ওই গৃহবধূ ধামইরহাট থানায় শনিবার ১১ জুলাই বিকেলে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালে পরিবারিকভাবে আগ্রাদ্বিগুন ইউনিয়নের শাহাজাহান আলীর মাস্টার্স পাশ মেয়ে শারমিন আক্তারের সাথে বিয়ে হয় পাশের রামচন্দ্রপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে আগ্রাদ্বিগুন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল মমিনের। বিয়ের তিন মাস পর যৌতুকলোভী শিক্ষক স্বামী মমিন মোটরসাইকেল চায় শারমিনের পরিবারের কাছে। মোটরসাইকেল দিতে না পারায় ওই গৃহবধূর উপর শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন।

গত ২৯ মার্চ শ্বশুরবাড়ির লোকজন মারধর করে স্বামীর বাড়ি থেকে বের করে দেয় শারমিনকে। শেষে শারমিনের বাবা শাহাজাহান আলী মেয়েকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে ২৫ এপ্রিল যৌতুক ও নারী নির্যাতন আইনে মামলা করে ভূক্তভোগীর পরিবার।

এঘটনায় পুলিশ আবদুল মমিন ও তাঁর বাবা আবদুস সাত্তারকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়। তবে, সম্প্রতি মমিনের বাবা আবদুস সাত্তার জামিন পায়। কারগার থেকে বেরিয়ে আসার পরেই মামলা তুলে নেয়ার জন্য শারমিনের পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেন।

ভূক্তভোগী শারমিন জানান, আমরা নিতান্তই গরীব। আমার বাবা শুধু আমার সুখের জন্য বিয়েতে চার ভরি সোনা ও দেড় লাখ টাকা দিয়েছেন। এখন ১০ লাখ টাকার জন্য নির্যাতন করে আমাকে বাড়িছাড়া করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

আগ্রাদ্বিগুন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেনজির আহমেদ জানান, যৌতুক ও নারী নির্যাতনের মামলা হওয়ায় সহকারী শিক্ষক আব্দুল মমিনকে ম্যানেজিং কমিটি সাময়িক বরখাস্ত করেছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শ্বশুর আবদুস সাত্তার বলেন, ছেলের বউয়ের কারনে আমি জেল খাটেছি। এখন ওই বউকে নিয়ে আমার ছেলে সংসার করবে কি-না, ভাবতে হবে। যৌতুকের ব্যাপারে আমরা কোন কথা বলিনি, এমনকি কাউকে আমরা হুমকিও দিইনি।

 

ধামইরহাট থানার ওসি মো. আবদুল মমিন জানান, যৌতুক ও নারী নির্যাতনের মামলায় আসামী আবদুল মোমিন ও তাঁর বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই আসামি এখনও কারাগারে রয়েছেন। বাদীকে নানাভাবে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় একটি জিডি (জেনারেল ডায়েরী) দায়ের করেন শারমিন আক্তার। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

 

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
Website Design and Developed By Engineer BD Network