আপডেট: জুন ১৯, ২০২০
শাহে ইমরান, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) থেকে : লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বদরপুর গ্রামের ঘটক আমেনা বেগমের প্রতারনার ফান্দে লোভে পড়ে মেয়েদের পাত্রস্থ করায় মা-বাবা দিশেহারা। চতুর আমেনা নানা লোভ লালসা দেখে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বেকার,অসহায় ছেলেদের নিকট অর্থবিত্ত পরিবারের মেয়েদের বিয়ে দিচ্ছে। শুধু তাই নয় পুলিশ ও ইউপি চেয়ারম্যানের ম্যানেজের কথা বলে কম বয়সী মেয়েদের বয়স বাড়িয়ে দেওয়ার নামেও মোচা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সুত্রে জানায়,উপজেলার দরবপুর গ্রামের আশেক মুন্সী বাড়ির দিনমজুর সিরাজ মিয়ার স্ত্রী আমেনা বেগম ৪ ছেলে,১ মেয়ে। স্বামীর আয় ভালো না থাকায় কয়েক বছর থেকে শুরু করে ঘটকালী। চতুর আমেনা মেয়ের পরিবারকে নানা প্ররোচনা দিয়ে বিয়েতে রাজি করে ছেলের পরিবারকে মোটা অংকের যৌতুকের আশ্বাস দিয়ে তড়িগড়ি করে বিয়ে ঠিক করে। এতে মেয়ের পরিবার থেকে সর্বনিম্ম ৫ হাজার এবং ছেলে পরিবার থেকে ৫ হাজার টাকা করে আদায় করছে। বুক্তবুগী কয়েকজন পরিবার বলেন,আমেনা ঘটকালী রছে আর তার স্বামী ঘরে রান্না-বান্না করছে। এতে আমেনা মাত্র কয়েক বছরে কয়েক লক্ষ টাকার মালিক হয়েছে। বাড়িতে সম্পত্তি কিনার পাশাপাশি দুই ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছে। তার প্রতারনা থেকে রক্ষা পায়নি নিজ বাড়ির লোকেরা। কেউ প্রতিবাদ করলে রাজনীতিক দাপট ও পুলিশের হুমকি দিচ্ছে।
কালিকাপুর গ্রামের সমাজসেবক হারুন বলেন,আমেনা স্কুল পড়ুয়া মেয়েদের পরিবারের সাথে মোটা অংকের টাকা কন্ট্রাক করে জম্মনিবন্ধন কার্ড়ে বয়স বাড়িয়ে বিয়ের ব্যবস্থা করছে। স্থানীয় ভাবে বিয়ে না হলে আইনজীবির মাধ্যমে বিয়ের আয়োজন করাচ্ছে। সাম্প্রতিক কমর উদ্দিন বেপারী বাড়ির প্রবাসীর ৫ম শ্রেনীর এক মেয়েকে একই কায়দা বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। নানা কারনে ওই বিয়ের কাজ সম্পন্ন করতে না পারায় মেয়ের মায়ের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে মিথ্যে তথ্য দিয়ে হয়রানী করে।
গ্রামের আঃ মতিন বলেন, আমার বড় মেয়ে মুক্তা আক্তার কে এই আমেনা ৫ বছর আগে এক লক্ষ টাকা যৌতুক নিয়ে মোমিনপুর গ্রামে বেকার ছেলের সাথে বিয়ে দেয়। নানা লোভ-লালসা দেখিয়ে আমেনা নিজের সম্মানীও দশ হাজার টাকা নেয়। ছেলের যৌতুকের টাকা নিয়ে সেখান থেকেও দশ হাজার টাকা নেয়। কালিকাপুর গ্রাম মাহাধালিহাজি বাড়ি জাহানারা বেগম বলেন,আমার মেয়ের জন্য ছেলে ঠিক করে দশ হাজার টাকা এবং ৫ জনের খাবার দাবী করে। তাকে টাকা না দেওয়ার কারনে আত্মীয় হয়নি। অন্যদিকে আত্মীয় করার জন্য আসলে আমেনা কুৎসারটিয়ে ভেঙ্গে দেয়। গ্রামের অহিদ উল্যাহ বলেন,লকডাইন চলাকালে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে প্রশাসন কঠোর হয়। আমেনা এই সুযোগে ছেলে ও মেয়ের পরিবার থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কয়েকটি বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেছে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আমেনা বেগম বলেন, পরিশ্রম করে উভয় পরিবারকে একত্রিত করে বিয়ে ঠিক করছি। আমি পারিশ্রমিক নিচ্ছি,সমস্যা কি? করপাড়া ইউপির মজিব চেয়ারম্যান সবকিছু জানে।
করপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুল হক মজিব বলেন, আমেনা ঘটকালী করে জানি, কিন্তু টাকা নিচ্ছে জানি না, কেউ বলেও না। এ ধরনের কাজ করলে আমি গোপনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো।