৩০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার

 

ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের জমিতে অবৈধ ইমারত নির্মাণের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

আপডেট: জুন ১৮, ২০২০

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

অমর চাঁদ গুপ্ত অপু, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) থেকে : দিনাজপুরের ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের জায়গা দখলে নিয়ে অবৈধভাবে পাকার ইমারত নির্মাণের প্রতিবাদসহ কলেজের জায়গা দখল মুক্ত করার দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।

কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের প্রধান ফটকের সম্মূখ সড়কে সকাল ১০ টা থেকে সকাল ১১ টা পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে দাবির সমর্থনে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র তৌহিদুজ্জামান রাসেল, তানভির আহম্মেদ, মনির হোসেন, জয়া দত্ত, আয়শা সিদ্দিকা, স্বর্ণালী পাল, গোপিকা বর্মন, ইউসুফ আলী, নাহিদ হোসেন, সাখাওয়াত হোসেন, আদিত্য প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, উপজেলা শিবনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাসুদেবপুর (ডাঙা) এলাকায় ফুলবাড়ীর সরকারি কলেজের ০.৯৭ একর জমি রয়েছে। যার দাগ- ২৪০ (পুরাতন)। ওই জমির দশমিক ২৭ একর দখলে নিয়ে পৌর এলাকার গড় ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা এবং কলেজ জমি সংলগ্ন হোসেন কমিউনিটি সেন্টারের মালিক আবুল হোসেন নিজের ক্রয়কৃত জমির সাথে সাথে জোরপূর্বক কলেজের ওই জমি দখলে নিয়ে পাকা ইমারত নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আবুল হোসেনের অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে কলেজকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। জরুরি অবস্থা শেষ হলে আবুল হোসেন আবারও একই কায়দায় কলেজের জমি দখলে নিয়ে ইরামত নির্মাণ কাজ শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানোর পরও কলেজের সরকারি এই জমি উদ্ধারে কিংবা অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদের বিষয়ে কেউই তেমন ভূমিকা রাখছেন না। এরই মধ্যে চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি দুপুুরে আবুল হোসেন পুনরায় স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করেন। কলেজের ভূমি পরিচালনা কমিটির শিক্ষকবৃন্দ কলেজের জায়গায় স্থাপনা নির্মাণে বাঁধা দিলেও তোয়াক্কা না করেই নির্মাণ কাজ চালিয়ে যান। এক পর্যায়ে তোপের মুখে স্থাপনা নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখলেও কলেজ আবুল হোসেন বর্তমান মহামারী করোনায় সময় সবাই যখন জীবন বাঁচাতে নিজেকে সুরক্ষা দিতে ব্যস্ত ঠিক তখনই কৌশলে রাতে কলেজের ওই জায়গায় নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন আবুল হোসেন। দ্রুত অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনার ও অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদসহ কলেজের জায়গা কলেজকে বুঝিয়ে দেওয়া না হলে কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে নিজেরাই ওই জায়গায় থেকে অবৈধ সকল কর্মকান্ড উচ্ছেদের উদ্যোগ নিবে।

আবুল হোসেন বলেন, কলেজের জায়গায় নয়, নিজের ক্রয়কৃত জমিতেই ইরামত নির্মাণ করছেন। সীমানা উল্লেখ করেই গত ২৫ বছর পূর্বে ওই জমিটি ক্রয় করা হয়েছে। সরকারের এত জায়গা থাকতে এতটুকু জায়গা নিয়ে এত হৈচৈ কেন? এটা বোধগম্য নয়।
ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. নজমুল হক জানান, কলেজ প্রথম ১৯৬৫ সালের ২৯ মে জমির মালিক জমির আলী মোল্ল্যার কাছে দক্ষিণ বাসুদেবপুর মৌজার ২৪০ নম্বর দাগে ৯৭ শতাংশ জমি তৎকালিন ১ হাজার ৫০০ টাকায় ক্রয় করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। আবুল হোসেন নিজের জমির সাথে জোরপূর্বক কলেজের জমি দখল করে রাতে ইমারত নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কলেজের ওই জমির ওপর বহতল ছাত্রাবাস নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম চৌধুরী বলেন, একাধিকবার জায়গাটি সরেজমিন পরিদর্শনসহ প্রশাসনের নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত সকল প্রকার নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছিল। কিন্তু এখন শুণছি আবারও কাজ করছেন আবুল হোসেন নামের ব্যক্তি। বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষকে নিয়ে নিস্পত্তি করার উদ্যোগে নেওয়া হবে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
Website Design and Developed By Engineer BD Network