আপডেট: জুন ১১, ২০২০
অমর চাঁদ গুপ্ত, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) থেকে : দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলায় গবাদিপশুর মধ্যে লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) ভাইরাস দেখা দিয়েছে। এতে খামারী ও প্রান্তিক কৃষকরা চরম দুশচিন্তায় ভুগছেন। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি গরু মারা যাওয়ারও খবর পাওয়া গেছে। উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের সাথে মিল নেই আক্রান্তের সংখ্যা। কৃষকরা বলছে আক্রান্ত হয়েছে কয়েক হাজার গরু। এ পরিস্থিতিতে উপজেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগ আতঙ্কিত না হয়ে সচেতনতার পরামর্শ দিচ্ছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সুত্রে জানা যায়, বোচাগঞ্জ উপজেলাতে গরু সংখ্যা ১ লক্ষ ৪৪ হাজার ৭১১ টি। এর মধ্যে লাম্পি স্কিন আক্রান্ত গরুর সংখ্যা প্রায় ৪শ ৫০ থেকে ৫শ টি। মারা যাওয়ার সঠিক কোন তথ্য নেই। জনবল কম থাকার কারনে মাঠ পর্যায়ে কোন তথ্য সংগ্রহ করতে পাচ্ছেন না। এছাড়াও কৃষকরা আক্রান্ত গরু নিয়ে প্রাণী সম্পদ অফিস না আসার কারণে অনেকটা তথ্য সংগ্রহ করতে সমস্যা পড়তে হচ্ছে।
তারা আরো জানান, লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভাইরাসটি আক্রান্ত গরুর শরীর প্রথমে ফুলে গুটি-গুটি হয়। কয়েকদিন পর গুটিগুলো ফেটে রস ঝড়তে থাকে। ফলে ফেটে যাওয়া স্থানেই ক্ষত সৃষ্টি হয়ে গরুর শরীরে প্রচন্ড জ্বর এবং খাবার রুচি কমে যায়। নাক ও মুখ দিয়ে লালা বের হয়। তারা বলছে লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) ভাইরাস শুধু বোচাগঞ্জ উপজেলা নয়, বিরল,কাহারোল সহ জেলার অনেক উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ছে। মশা, মাছি, অঠালি গরুর শরীর না পড়ে এজন্য সচেতন থাকতে হবে।
সরেজমিনে বোচাগঞ্জ উপজেলার সেতাবগঞ্জ পৌর এলাকার ছোটকুর মোড়, নেংরাকালী , ৫নম্বর ইউনিয়নের ছাতইল, বনহরা,পলাশবাড়ী,মাহেরপুর, ৬ নম্বর ইউনিয়নের রনগাও,কনুয়া ,৩ নম্বর ইউনিয়নের মতিজাপুর, রতনদা, ২ নম্বর ইউনিয়নের ইশানিয়া গ্রামসহ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামঘুরে দেখা যায় এই রোগের প্রাদুর্ভাব। কথা হয় বেশ কয়েক জন কৃষকের সঙ্গে। তারা বলে আমাদের গ্রামের অনেক গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়াও বেশ কয়েকটি গরু মারা গেছে।
সেতাবগঞ্জ পৌর এলাকার ছোটকুর মোড় বাসিন্দা প্রান্তীক কৃষক দেবেন দেব শর্মা বলেন, গত ২৫ দিন আগে আমার একটি গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। গরুর অবস্থা ক্রমেই খারাপ হয়েছিল। গরুটির পিছনের ডান পায়ে পচন ধরেছে। বর্তমানে চিকিৎসা করে একটু সুস্থ হয়েছে। বর্তমানে গরুটি সামন্য করে খাবার খেতে পাচ্ছে।
বোচাগঞ্জ উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো.আব্দুস ছালাম বলেন, লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) ভাইরাস নামে পরিচিত। মশা,মাছি,অঠালি মাধ্যমে এই ভাইরাসটি ছড়ায়।সচেতনতার মাধ্যমে এ ভাইরাস থেকে বাঁচা সম্ভব। এ জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উপর জোর দিতে হবে। কৃষকদের সচেতনতার জন্য আমরা নিয়মিত উঠান বৈঠক করছি।