আপডেট: মে ২, ২০২০
আরিফুল হক তারেক, মুলাদী (বরিশাল) থেকে : মুলাদীতে কলেজ ছাত্রীর সাথে প্রেমের জেরেই খুন হয়েছেন ইমরান। গত ২ মে সকালে হত্যাকারী যুবরাজ খলিফা বরিশাল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধী দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মুলাদী থানা পুলিশ।
এছাড়া পুলিশ হত্যার অস্ত্র ছোড়া, রক্তমাখা জামা কাপড়, ইমরানের মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে। মূল হত্যাকারী যুবরাজ (২৬) উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের উত্তর বালিয়াতলী গ্রামের শাহ আলম খলিফার ছেলে। সে কিশোরগঞ্জে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) কোর্সে অধ্যায়নরত। গত ২৯ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে যুবরাজ একই গ্রামের আলতাফ হোসেন দফাদারের ছেলে ইমরান হোসেনকে জবাই করে হত্যা করে। ৩০ এপ্রিল সকালে স্থানীয়রা লাশ দেখতে পেয়ে ইমরানের স্বজন ও থানায় সংবাদ দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪জনকে আটক করে।
থানা পুলিশ জানায়, উত্তর বালিয়াতলী গ্রামের জনৈক আলাউদ্দিন সরদারের মেয়ে ও হাজ্বী সৈয়দ বদরুল হোসেন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী আফরোজা আক্তারের সাথে দীর্ঘ ৭ বছর যুবরাজ খলিফার প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিলো। কিছুদিন আগে যুবরাজের সাথে আফরাজার প্রেমের বিচ্ছেদ হয় এবং আফরোজা বিদেশ ফেরৎ ইমরানের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি যুবরাজ মেনে নিতে না পেরে সে কয়েক দফা ইমরানকে হুমকি দেয় এবং আফরোজার সাথে সম্পর্ক বাদ দিতে বলে। কিন্তু যুবরাজের হুমকি উপেক্ষা করেই আফরোজার সাথে সম্পর্ক চালিয়ে যায়।
কলেজ ছাত্রী আফরোজা জানায়, গত ২৯ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে ইমরান দেখা করতে তাদের বাড়িতে আসে। ওই সময় পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা যুবরাজ ও তার সহযোগিরা ইমরানের ওপর হামলা চালায়। ইমরান দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও যুবরাজ তাকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে ইমরান পড়ে গেলে যুবরাজ ও তার সহযোগীরা তাকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে।
ইমরান হত্যার ঘটনায় তার পিতা আলতাফ হোসেন দফাদার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে ৩০ এপ্রিল রাতে মুলাদী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার সূত্রে পুলিশ স্থানীয় ও কলেজ ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘাতক যুবরাজকে চিহ্নিত করে এবং গত ১লা মে পুলিশ অভিযান চালিয়ে উপজেলার চরপদ্মা সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে যুবরাজকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
অপরদিকে ইমরান খুন হওয়ার পর থেকে যুবরাজের ভাই সোহেল খলিফা, জুয়েল খলিফা, মা পেয়ারা বেগম, নাজেম হাওলাদারের পুত্র নান্টু হাওলাদার ও মন্টু হাওলাদার, আয়নাল সরদারের স্ত্রী রোকেয়া বেগম, দুলাল হাওলাদারে স্ত্রী রহিমা বেগম পলাতক রয়েছেন জানিয়েছেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা।