এবারের ভয়াবহ বন্যায় জামালপুরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট। বন্যার পানিতে ডুবে, পানিবন্দি অবস্থায় সাপের কামড় ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন ৪০ জন। পানি নেমে যাওয়ায় এখন ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার পাশাপাশি স্বজন হারানোর শোক সইতে হবে অনেককে।
জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সূর্য্যনগর গ্রামের বাবলি বেগম। দশ বছর বয়সী একমাত্র মেয়ে সাথীকে হারিয়ে এখন পাগলপ্রায়। গত ২১ জুলাই দুই চাচাতো বোন সুজনী আর মৌসুমির সঙ্গে বন্যার পানিতে গোসল করতে যায় সাথী, তবে ফেরা হয়নি তার। স্থানীয়রা মৌসুমীকে উদ্ধার করতে পারলেও সুজনীর সাথে বন্যার পানিতে ডুবে মারা যায় সাথী। এখন তাদের বাড়িতে শুধুই শোকের ছায়া।
কেবল সাথী আর সুজনীর পরিবারই নয় রাহাত, আরাফাত, আল্পনা ও ময়নার পরিবারেও বইছে শোকের মাতম। চারিদিকে বন্যার পানি থাকায় মৃত স্বজনদের দাফন করতে হয়েছে অন্য এলাকায়।
এবারের বন্যায় প্রায় ২০ দিন ধরে পানিবন্দি ছিলেন জামালপুরের সাত উপজেলার ১৩ লাখ মানুষ। তলিয়ে যায় বসতবাড়ী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাটসহ প্রত্যন্ত অঞ্চল। বেশীরভাগ মানুষের ঠাঁই হয় আশ্রয় কেন্দ্র, উঁচু সড়ক আর বাঁধে। পানিবন্দী অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করলেও তাদের কষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছে এবারের বন্যায় মৃত্যুর মিছিল।
চলতি বন্যায় ঝরে পড়েছে ৪০টি তরতাজা প্রাণ। বন্যায় জামালপুর জেলায় পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জনের। আর সাপের কামড়ে ৩ জন এবং বিদ্যুত স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১ জনের।
জেলার সিভিল সার্জন ডা. গৌতম রায় বলেন, বন্যার সময় প্রতন্ত এলাকায় কাজ করেছে ৮০টি মেডিকেল টিম। তাদের চেষ্টার পরও ঠেকানো যায়নি অনাকাঙ্খিত মৃত্যুর ঘটনা।