আপডেট: জুন ২, ২০২৫
নেক্সটনিউজ প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের সরকারী সা’দত কলেজে বদলীকৃত সেই কলেজ শিক্ষিকা নাদিরা ইয়াসমিনকে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছেন শিক্ষক -শিক্ষার্থীরা। নাদিরা ইয়াসমিনকে সা’দত কলেজে বদলির খবরের পরপরই কলেজের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক শিক্ষার্থী তাকে ‘ইসলামবিরোধী’ ও ‘ধর্ম অবমাননাকারী’ আখ্যায়িত করে কলেজে ঢুকতে না দেয়ার ডাক দেন।
ইসলামবিদ্বেষী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ নরসিংদী সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিনকে টাঙ্গাইলের সরকারি সা’দত কলেজে যোগদান করতে না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। বদলির আদেশ বাতিলের দাবিতে তারা গণপ্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রশিবিরের ব্যানারে এ কর্মসূচি করা হবে।
রোববার (১ জুন) সন্ধ্যায় এক মাননববন্ধনে এমন ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
হেফাজতে ইসলামের আলটিমেটামের পরদিন গত ২৬ মে নাদিরা ইয়াসমিনকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে বদলি করা হয়। ২৫ মে হেফাজতে ইসলাম ‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কলেজশিক্ষক নাদিরাকে অপসারণের’ আলটিমেটাম দেয়। তবে সেখানে যোগদানের আগেই আবার টাঙ্গাইলে বদলি করা হয়েছিলো তাকে।
নাদিরা ইয়াসমিন নরসিংদী জেলায় নারী অধিকারকর্মী হিসেবে পরিচিত। ‘নারী অঙ্গন’ নামে তার একটি সংগঠন রয়েছে। এ ছাড়া ‘নারী অঙ্গন’ নামের একটি ওয়েব পোর্টালের সম্পাদক তিনি। সম্প্রতি ‘হিস্যা’ নামে একটি ম্যাগাজিনে ‘বিতর্কিত লেখা’ ছাপানোর অভিযোগ তুলে তাকে অপসারণ ও শাস্তির দাবি জানায় হেফাজতে ইসলাম। একাধিক প্রতিবাদ সমাবেশ ও স্বারক লিপি প্রদান করে।
২৫ মে নরসিংদী জেলা হেফাজতে ইসলামের সদস্যরা সকাল ১১টায় শহরের শিক্ষা চত্বরে প্রতিবাদ সভা করে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলামী নরসিংদী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আল্লামা ইসমাইল নূরপুরী।বক্তব্য রাখেন- হেফাজতে ইসলাম নরসিংদী জেলা শাখার উপদেষ্টা আল্লামা বশির উদ্দিন, সিনিয়র সহসভাপতি মুফতি রশিদ আহমেদ, মুফতি রবিউল ইসলাম, সহসভাপতি প্রিন্সিপাল আব্দুল নূর, মাওলানা ইলিয়াছ শেরপুরী, মাওলানা ওলিউল্লাহ, দপ্তর সম্পাদক মুফতি নুরুল হুদা, মাওলানা হেফাজত নেতা সাদেকুর রহমান সিদ্দিকী, মাওলানা ছলিমুল্লাহ আজিজ, মুফতি আব্দুল বাছেদ, মাওলানা আশরাফ হোসেন ভূঁইয়া, মাওলানা খোরশেদ আলম মক্কী, নরসিংদী সরকারি কলেজের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান, মোজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান তারা। সেখানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরীর কাছে স্বারকলিপি দেন।
এ সময় তারা শিক্ষক নাদিরা ইয়াসমিনকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বদলির আল্টিমেটাম দেন। এতে প্রশাসন ব্যর্থ হলে জেলায় যে কোনো অঘটনের জন্য প্রশাসন দায়ী থাকবে বলে উল্লেখ করেন তারা। আল্টিমেটামের পরদিন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে নাদিরা ইয়াসমিনকে বদলি করা হয়।